রাজীব তামান্নার বিবাহ বার্ষিকীতে প্রেমের স্মৃতি রোমন্থন
স্টাফ করেসপনডেন্ট || নিউজ নারায়ণগঞ্জ ১১:১০ পিএম, ৩০ এপ্রিল ২০২১ শুক্রবার

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও সরকারি তোলারাম কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক নির্বাচিত ভিপি মাসুকুল ইসলাম রাজীবের বিবাহ বার্ষিকী শুক্রবার (৩০ এপ্রিল)।
এ বছর পবিত্র মাহে রমজানের ১৭ রমজান বদর দিবসে বিবাহ বার্ষিকী হওয়ায় এবং করোনাকালীন সময়ে স্ত্রী পরিবার নিয়ে ঘরেই বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করছেন রাজীব। দিনটিকে ঘিরে সকলের কাছে তাদের পারিবারিক জীবনে সাফল্য কামনায় দোয়া চেয়েছেন। এ বছরে প্রায় দেড় যুগ অতিক্রম হয়েছে তাদের বিবাহের, এমনটি জানিয়েছেন রাজীব।
দিনটিকে ঘিরে নিজেদের প্রেমের জীবনের শুরুর দিকের স্মৃতি স্মরণ করেছেন তিনি।
রাজীব বলেন, আমার বর্তমান জীবনসঙ্গী তামান্না ফেরদৌসকে নিয়ে আমি অনেক সুখী। ওর মত একজন জীবনসঙ্গী আমার জন্য নির্ধারণ করে রাখায় আমি আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ। তার প্রতি আমি এখন পর্যন্ত আমার নুন্যতম দায়িত্ববোধ পালন করতে পারিনি। সব সময় রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থেকেছি। ও আমাকে রাজনৈতিকভাবেও সহায়তা করেছে। এতকিছুর পরও আমার প্রতি তার ভালবাসার একটু কমতিও আমি দেখতে পাইনি। ২০০৩ সালে কলেজের ভিপি থাকাবস্থায় আমার বাবা, মা আমাকে কয়েকটি মেয়ের ছবি দেখায় আমার বিয়ের জন্য। আমার কাউকে পছন্দ হয়নি। বাসা থেকে বিয়ের জন্য আমার উপর চাপ দিচ্ছিল আমার পরিবার। যেহেতু আমি কলেজের ভিপি ছিলাম কলেজে থাকাবস্থায় আমি ছিলাম সর্বোচ্চ সতর্ক। একদিন আমি প্রতিদিনের মত কলেজ সংসদে বসে ছিলাম এমন সময় সকালের দিকে আমার শ্বশুর ইসহাক আহমেদ আমার কাছে একটি বিচার নিয়ে আসে। সে জানায় তাঁর মেয়েকে (তামান্না) কয়েকটি ছেলে ডিস্টার্ব করে। তারা বাইক নিয়ে তার মেয়ের পিছনে পিছনে বাড়ি পর্যন্ত যায়। আমি তাকে পরদিন তার মেয়েকে নিয়ে আসতে বলি। কথামত পরদিন সকালে তার মেয়েকে নিয়ে সে কলেজ সংসদে আসে। এসময় মেয়েটি সংসদে ঢুকেই আমাকে খুব সুন্দর করে সালাম দেয়। সেই সালামেই আমি তার প্রেমে পড়ে যাই। তবে প্রেমে পড়লেও আমি কাউকে তেমন কিছু বুঝতে দেইনি। আমি তখন তাদেরকে বলি আপনারা এখানে এসেছেন এতেই হবে যদি এর পর আবার আপনাকে কেউ ডিস্টার্ব করে আমাকে জানাবেন। যারা এমন ডিস্টার্ব করে তারা যদি দেখে থাকে তাহলে আর সমস্যা করবেনা।
তারপর থেকে আমি সকলের অজান্তে ও অগোচরে তামান্নার খেয়াল রাখতাম। দেখতাম সে ঠিকমত কলেজে আসতো কিনা তাকে আর কেউ জ্বালাতন করে কিনা। আমার কেন জানি মনে হত আল্লাহ তামান্নার সাথেই আমার জুড়ি মিলিয়ে রেখেছে। কেন জানি মনে হত ওর সাথেই আমার বিয়ে হবে। ওই হবে আমার জীবনসঙ্গিনী। তারপর ২০০৪ সালে যখন কলেজে নবীনবরন অনুষ্ঠান হয় তখন আমি খেয়াল করি সেখানে তামান্না আসে। আমি তখন একটি গান গেয়েছিলাম অঞ্জন দত্তের হ্যালো বেলা বোস তুমি শুনতে কি পাচ্ছো। গানটি গাওয়ার সময় আমি মাঝখানে একটি লাইন বলে ফেলি নিজের অজান্তেই সেটি হচ্ছে হ্যালো তামান্না তুমি শুনতে কি পাচ্ছো। এই ছিল আমার প্রথম চেষ্টা তাকে বুঝানোর যে আমি তাকেই ভালবাসি এবং বিয়ে করতে চাই।
যদিও আমি আজও জানিনা সে বুঝেছিল কিনা। এটি নিয়ে একটি স্থানীয় পত্রিকা শিরোনামও করেছিল কে এই রাজীবের তামান্না। প্রেমের বিয়ে না হলেও পছন্দ করেই ওকে আমি বিয়ে করেছি। আমি সুখী ওকে পেয়ে কারণ এখনো যদি রাত ৩ টা বা ৪ টায় বলি যে আমার কিছু খেতে ইচ্ছা করছে ও নির্দ্বিধায় তা রান্না করে দেয় কোন প্রশ্ন করা ছাড়াই। আমাদের এই বিবাহিত জীবনে ৪ থেকে ৫ বার মাত্র ঝগড়া করেছি তাই ইচ্ছা করেই। আমার আর তামান্নার বিয়ের ঘটনার পর আমার মনে পড়ে দিল তো পাগল হ্যায় ছবির নায়ক আমির খানের ডায়ালগ জীবন সঙ্গিনী আগে থেকেই নির্ধারিত হয়ে থাকে এটা তুমি তাকে পেলেই বুঝবে। মূলত ওর সব কিছুই আমার চাওয়া পাওয়ার সাথে মিলে গিয়েছিল। আমিও ওকে প্রথম দেখায় বুঝেছি যে আমি তাকে ভালবেসে ফেলেছি আর তাই আমার পরিবারকে পরবর্তীতে ওদের বাসায় প্রস্তাব দিয়ে পাঠিয়ে ওকে বিয়ে করি।
মাসকুল ইসলাম রাজীবের স্ত্রী তামান্না ফেরদৌস জানান, আমি বিয়ের আগে থেকে তাকে কলেজের বড় ভাই হিসেবে চিনতাম। তখন তাকে বড় ভাই হিসেবেই পছন্দ করতাম কিছুটা ভালোবাসতাম। আমাদের বিয়েটা মূলত পারিবারিকভাবেই কিন্তু পারিবারিকভাবে হলেও আমাদের প্রেমে তেমন এক বিন্দুও ভালবাসার ঘাটতি নেই।