না.গঞ্জের কলেজগুলোতে নেই ছাত্রাবাস, দুর্ভোগ

|| নিউজনারায়ানগঞ্জ২৪.নেট ০১:০১ এএম, ১ জানুয়ারি ২০১৫ বৃহস্পতিবার

না.গঞ্জের কলেজগুলোতে নেই ছাত্রাবাস, দুর্ভোগ

প্রাচ্যের ড্যান্ডি নারায়ণঞ্জে উচ্চতর শিক্ষার দুইটি বিশ্ববিদ্যালয় থাকলেও নেই ছাত্রদের থাকার মতো কোন ছাত্রাবাস। নারায়ণগঞ্জ কলেজে কোন ছাত্রাবাস নেই; আর তোলারাম কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘শেরে বাংলা ছাত্রাবাস’ থাকলে সেটাও বন্ধ থাকায় মেসে থাকতে বাধ্য হচ্ছে দূর দূরান্ত থেকে উচ্চ শিক্ষার জন্য আসা ছাত্ররা। আর মেসে থাকতে পড়ালেখার পাশাপাশি গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা।   অনেক সময় ব্যাচেলার রুম না পেলে গ্রামের ফিরে যেতে হচ্ছে তাদের। সেই সাথে ব্যাচেলার বাসাগুলোতে পানি, বিদ্যুৎ, খাবার, জায়গা কম থাকায় একাদিক ছাত্র গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে। এমন নানা অভিযোগ রয়েছে দূর দূরান্ত থেকে উচ্চ শিক্ষার জন্য নারায়ণগঞ্জ শহরের আসা ছাত্রদের। এ ধরনের কয়েকজন ছাত্রের সঙ্গে কথা বলে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন নিউজ নারায়ণগঞ্জ এর স্টাফ করেসপনডেন্ট সনদ সাহা সানি।   জানা গেছে, ১৯৪৫ সালে সরকারি তোলারাম কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে তোলারাম কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক (পাস), স্নাতক (সম্মান) স্নাতকোত্তর ১ম ও শেষ পর্ব পর্যন্ত পড়ানো হয়। তোলারাম কলেজ ওয়েব সাইটের তথ্য অনুসারে কলেজের মোট ছাত্রছাত্রী সংখ্যা ১৯ হাজার ৭৫৮ জন। যার ছাত্র সংখ্যা ১৩ হাজার ২৯৩ এবং ছাত্রী সংখ্যা ৬ হাজার ৪৬৫ জন। অন্যদিকে ১৯৮০ সালে নারায়ণগঞ্জ কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ কলেজে উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক (পাস) ও স্নাতক (সম্মান) পর্যন্ত পড়ানো হয়। কলেজে মোট ছাত্রছাত্রী সংখ্যা ৮ হাজারের বেশি। যার মধ্যে ছাত্র ৫ হাজার এবং ছাত্রী ৩ হাজার।   নারায়ণগঞ্জ কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র হাফিজুর রহমান। গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর জেলার সদর থানার আলিয়াবাদ গ্রামের শেখ আব্দুলে ছেলে। হাফিজুর নিউজ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, আমরা যারা দূর দুরান্ত থেকে পড়ালেখার করতে আসি তাদের অনেকের নারায়ণগঞ্জে কোন পরিচিত বা আত্মীয় স্বজন নেই। শুধু মাত্র পড়ালেখার জন্য নারায়ণগঞ্জে আসা। নারায়ণগঞ্জ কলেজে ভর্তি হয়ে জানতে পারলাম কলেজের কোন ছাত্রবাস নেই। তাই রুম অনেকদিন ব্যাচেলার রুম খোঁজতে থাকি কিন্তু কোথাও কোন রুম না পেয়ে। ৮জন মিলে একটি ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া নেই। যার বর্তমান ভাড়া ১৫ হাজার টাকা। প্রত্যেকের ১ হাজার ৮৭৫ টাকা দিতে হয়। এছাড়া তিন বেলায় খাবার খরচ ২ হাজার ৮০০ টাকা, দুইটা প্রাইভেট পড়ি ১ হাজার টাকা এবং প্রতি মাসে কলেজের বেতন ৩০০ টাকা। এগুলো নিয়ে  প্রতি মাসে ৮ হাজার থেকে ৯ হাজার টাকা খরচ হয়। যার অর্ধেক আমি প্রাইভেট পড়িয়ে আয় করি এবং বাকিটা বাড়িতে থেকে আনতে হয়।   হাফিজুর আরো বলেন,  আমাদের ছাত্রদের জন কোন ছাত্রবাস থাকলে অনেক উপকার হতো। থাকা ও খাওয়ার জন্য প্রতিমাসে ৬ হাজার টাকা খরচ হয়। কিন্তু যদি ছাত্রবাস থাকতো তাহলে খরচ কমে আসতো।   হাফিজুরের মত একই অবস্থা নোয়াখালী থেকে আসা হাবিবুল বাশারের। সে নারায়ণগঞ্জ তোলারাম কলেজের  ইংরেজি বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র। সে ফতুল্লা জামতলা এলাকায় মেসে থেকে পড়ালেখা করে। ছোট রুমে খরচ কম হলেও বাধ্য হয়েই গাধাগাদি করে থাকতে হয় বাশারকে। ৪ জনের ১ রুমের ভাড়া ৪ হাজার টাকা। যার মধ্যে বাশার পরিশোধ করে ১ হাজার টাকা এবং দুই বেলা খাবারের জন্য দেয় ২ হাজার টাকা। তারও একাধিক প্রাইভেট পড়তে হয়।   বাশার নিউজ নারায়ণগঞ্জকে জানান, পড়ালেখার খরচের সাথে তিনবেলা খাবার খরচ ও অতিরিক্ত বাসা ভাড়া টাকা জোগাড় করতে বেছে নিতে হচ্ছে বিভিন্ন র্পাটাইম চাকরী। যা কিনা পড়ালেখায় ব্যাহত করছে।   অন্যদিকে মেসে থেকে পড়ালেখা করা নারায়ণগঞ্জ কলেজের ব্যবসা শিক্ষা শাখার (পার্স) রাসেল ও একই কলেজের ইংরেজি বিভাগের ২ বর্ষের ছাত্র এবং তোলারাম কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র জাকারিয়া নিউজ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, ছাত্রদের কেউ বাসা ভাড়া দিতে চাই না। সবাই পরিবার সহ বাসা ভাড়া দিতে রাজি হয়। তাই আমাদের ছাত্রদের জন্য ছাত্রবাস হলে অনেক ভালো হয়। কিন্তু কি করবো নারায়ণগঞ্জের একটি কলেজেও কোন ছাত্রবাস নেই। তোলারাম কলেজে শেরে বাংলা ছাত্রবাস থাকলেও সেটাও বন্ধ। আমাদের কলেজের কর্তৃপক্ষ যদি কোন উদ্যোগ গ্রহন করেন তাহলেই ছাত্রবাস সম্ভব।   ছাত্রাবাস সম্পর্কে নারায়ণগঞ্জ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিরাজ কুমার সাহা নিউজ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, ছাত্রবাস সম্পর্কে আমাদের চিন্তা ভাবনা আছে। কিন্তু বর্তমানে আমাদের কলেজে শ্রেনীকক্ষের সংখ্যা কম থাকায় আগে শ্রেনী কক্ষের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এগুলো সমাধান হলে অবশ্যই ছাত্রবাসের জন্য আবেদন করা হবে।



নিউজ নারায়ণগঞ্জ এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আরো খবর