পত্রিকার হকার রশিদের ভাগ্যবদলের গল্প
স্পেশাল করেসপনডেন্ট || নিউজ নারায়ণগঞ্জ ১০:১৯ পিএম, ২৩ জানুয়ারি ২০২১ শনিবার

৪ বছর আগেও পত্রিকা বিলি করা (হকার) ছিল রশিদের পেশা। তবে ব্যতিক্রমধর্মী গরুর নলির হালিমে ভাগ্য বদলেছে হকার রশিদের। এখন সে পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী। অনন্য স্বাদ আর বৈশিষ্ট্যের জন্য হালিম রসিকদের মুখে মুখে এখন রশিদের ‘গরুর নলির হালিমের’ কদর। পরিশ্রম, একাগ্রতা, সততা আর নিষ্ঠাই খুলে দিয়েছে রশিদের সাফল্যের দুয়ার।
‘মুখরোচক এই হালিমের স্বাদ নিতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন অনেকে। শীতলক্ষ্যার পূর্ব তীরে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মদনগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকাতে প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতিদিনই ভীড় করছে সাধারণ মানুষ। জেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে গেছে এই হালিমের স্বাদ। সমাজের উচ্চবিত্ত থেকে সীমিত আয়ের মানুষ। রুচি আর স্বাদে বিকেল না হতে সবার ঠিকানা এই হালিমের দোকান। তবে শুক্র ও শনিবার সরকারী ছুটির দিনে জমে যায় ভোজনবিলাসী ক্রেতাদের ভিড়। দোকান ঘিরে জমজমাট ভিড় শুরু হয় সন্ধ্যা থেকে। গভীর রাত পর্যন্ত যেনো চলে ‘হালিম উৎসব’।
গত ৪ বছর ধরে নারায়ণগঞ্জবাসীকে ব্যতিক্রমধর্মী সুস্বাদু হালিমের স্বাদ যুগিয়ে আসছেন বন্দরের বাসিন্দা রশিদ। আলমচান উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৯৫ সালে এসএসসি পাশ করলেও সংসারের হাল ধরতে সেই যুবক বয়স থেকেই জীবনে অনেক কষ্ট করেছেন। দীর্ঘদিন পত্রিকার হকার হিসেবে কাজ করেছেন। কাক ডাকা ভোরে নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে পত্রিকা সংগ্রহ করে বিলি করতেন বিভিন্ন এলাকায়। দুপুরের পর থেকে একটি খাবার হোটেলেও কাজ করতেন। বৃথা যায়নি রশিদের কঠোর পরিশ্রম। সেই খাবার হোটেলে কাজ করার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ৪ বছর আগে বন্দরের মদনগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে শুরু করেন খাবার হোটেলের ব্যবসা। রেষ্টুরেন্টের নাম দেন প্যারেন্টস হালিম ও বিরিয়ানী হাউস।
রশিদের খাবারের হোটেলের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে গরুর নলির হালিম। যেটি নারায়ণগঞ্জে ব্যতিক্রম। আর এই মুখরোচক গরুর নলির হালিমের স্বাদ নিতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন অনেকে। রশিদ জানান, প্রতিদিন হালিমের সঙ্গে ১০০ পিছ নলি ও চাপ বিক্রি হয়ে থাকে। পাশাপাশি বিরিয়ানীও ভালই বিক্রি হচ্ছে। শুক্রবার ও শনিবার সরকারী ছুটির দিনে বন্দরে ভ্রমন পিপাসু মানুষের ভীড় থাকে বেশী। সেসময় বেচাবিক্রি বেশী হয়ে থাকে। রশিদ আরো জানান, ভাগ্যান্বষেনে প্রায় দেড় যুগ তিনি পত্রিকার হকার হিসেবে কাজ করেছেন। পাশাপাশি একটি রেস্টুরেন্টে পার্টটাইম চাকুরীও করেছেন। তবে এরপরেও ভাগ্য বদল হচ্ছিলনা। ৪ বছর পূর্বে তিনি নিজেই প্যারেন্টস হালিম ও বিরিয়ানী হাউস নামের রেষ্টুরেন্টটি দিয়েছেন। রেস্টুরেন্টে ভালই বিক্রি হচ্ছে। এখন তার অবস্থা বদলেছে। বর্তমানে তার অধীনেই অর্ধডজনের বেশী লোক কর্মরত রয়েছে।