বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে রাজীবের আক্ষেপ
স্টাফ করেসপনডেন্ট || নিউজ নারায়ণগঞ্জ ১১:২৫ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১ রবিবার

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির একজন সম্ভাবনাময় নেতা হলেন সদস্য মাসুকুল ইসলাম রাজীব। ছাত্রজীবনেও তার অনেক ঐতিহ্য ছিল। বর্তমানে তিনি জেলা বিএনপির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সাম্প্রতিক সময়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সমস্যা, সমস্যা থেকে উত্তোরণের উপায় সহ নানা সম্ভাবনা ও ক্ষতিকর দিক নিয়ে কথা বলেছেন।
নিউজ নারায়ণগঞ্জের সাথে খোলামেলায় আলোচনায় মাসুকুল ইসলাম রাজীব বলেন, বর্তমান কমিটি নিয়ে আমাদের প্রত্যাশা ছিল অনেক বেশি। বর্তমান কমিটি সুন্দর সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত হবে সেই শর্ত দিয়েই কমিটির যাত্রা শুরু করেছিল। দুঃখের সাথে বলতে হয় এই পর্যায়ে এসে কাংখিত লক্ষ্য থেকে অনেক বিচ্যুত হয়ে গেছি। ৮ মাস অতিবাহিত হয়ে গেছে যেভাবে নির্দেশনা ছিল সংগঠনকে ঢেলে সুন্দর করে সাজাতে হবে সেটা হয়নি। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান যেভাবে গাইডলাইন দিয়েছিলেন সেই গাইডলাইনের বাস্তব প্রতিফলত আমরা আমাদের কর্মকান্ডে প্রতিফলিত হচ্ছে বলে আমার কাছে মনে হয় না।
বিএনপির সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে রাজীব বলেন, এখনও সময় আছে নারায়ণগঞ্জ একটি উর্বর জায়গা। এখানে সবাইকে নিয়ে সমন্বয় করে যদি দল করা যেত। প্রথম মিটিংয়ে বলেছিলাম আমরা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই। আমাদের দেখে অন্য জেলা অনুপ্রাণিত হতো। এখন দৃষ্টান্ত স্থাপন করা দূরের কথা পূর্বের মতো আমার একটা তোমার একটা। দুই এক জায়গা উনাদের নিজেদের সাথে মিলে নাই অন্য কিছুর জন্য হয়তো মিলে নাই। নাহলে এতদিনে কমিটি হয়ে যেত। স্পষ্ট করে বলতে চাই আমাদের অনেক শ্রম আছে এখানে। এই দলে আমাদের রক্ত আছে আমাদের নিজেদের উজ্জল ভবিষ্যত সে ভবিষ্যত নষ্ট হয়ে অর্ধশতাধিক মামলায় জেল খেটেছি বাবা মায়ের জন্য কিছু করতে পারি নাই। পরিবারের জন্য কিছু করতে পারি না। আমার মতো লক্ষ লক্ষ্য নেতাকর্মীর এই অবস্থা।
তিনি বলেন, আমি দলের স্বার্থের জন্য দলের প্রয়োজনে নিজেকে উৎসর্গ করার মানসিকতা রাখি। অতএব যেখানে অন্যায় দেখবো সেখানে আমি বলবই। যে লোক জেলার যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে বলে আমাকে কেউ চিনে না সেই লোক আহবায়ক হয় কিভাবে? আমি জেলার ৪২ নং সদস্য আমাকে জেলার যে কোনো জায়গার কথা বলা হোক সেখানে আমি চিনবো না। আমার মতো বহু নেতা যারা প্রত্যন্ত এলাকা চিনে। যে ইউনিয়ন চিনে না সে জেলার নেতৃত্বে আসে কিভাবে? এরকম অনিয়ম বন্ধ করতে হবে।
রাজীবি বলেন, নেতৃবৃন্দদের সাহস দেখে কর্মীরা অনুপ্রাণিত হবেন। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয় ১২ বছরে এমন নেতৃত্ব দেখি নাই যাদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হবো। আমরা শুধু পালানো ভূমিকাই দেখছি। অতএব চিন্তাচেতনা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে পুরাতন চিন্তা ভাবনা সম্পূর্ণভাবে বাদ দিতে হবে। যুগ পরিবর্তন হয়েছে। দুর্বল চিত্তের মানুষের সাথে কেউ থাকে না। নেতৃত্বের মাধ্যে অনেক গাফলতি আছে অনেক ষড়যন্ত্র আছে। অনেকে ইচ্ছা করেই দলটা দুর্বল থেকে দূর্বলে হয় সে ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছে। এটা থেকে বের হওয়ার উদ্যোগ তারেক ভাইকে নিতে হবে।
তিনি বলেন, জেলা বিএনপির প্রতি আহবান উনারা বড় নেতা ভুল করবেন না। সব ভুলের ক্ষমা নাই। সব ভুল সবসময় গ্রহণযোগ্য না। একবার ভুল ক্ষমা করা যায় দুইবার করা যায় তিনবার করা যায় চারবার করা যায়। আমাদের চারবার পেরিয়ে গেছে। বারবার একই জিনিস আমরা দেখতে পারবো না। এইবার যদি নিজের পছন্দমত আওয়ামী লীগের লোক বাবা আওয়ামী লীগ ছেলে বিএনপি ভাই আওয়ামী লীগ ভাই বিএনপি জীবনে একদিন জেল খাটতে হয় না আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এখন পর্যন্ত উপজেলার চেয়ারম্যান এত বড় ভাগ্যবান যারা তারা বারবার নেতৃত্বে আসবে অসুদপায়ে এইবার এটা হলে নেতাকর্মীরা মেনে নিবে না। কেউ যদি মনে নেমে নিবে আর আওয়ামী লীগে সাথে আঁতাত করে কিছু করবেন তারা নিজেদের দিকে তাকাবেন। ঈমানের সাথে দায়িত্ব পালন করবেন। যদি ভুল করেন ভুলের খেসারত নিজের রাজনৈতিক জীবনের ক্যারিয়ারে ধ্বসের মাধ্যমে জবাব পেয়ে যাবেন।
রাজীবি বলেন, আমাদের কমিটি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে আমরা কিছু করি নাই। বলা হয়েছে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে বাদ দেয়া হয়েছে পরবর্তীতে জানলাম সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে না। কে কোথা থেকে বাদ দিয়েছে সব জানি। নিজের ব্যাপার ছিল বলি নাই। এখন আমার ব্যাপার না এখন দলের ব্যাপার। দলকে শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ করার ব্যাপার। যেহেতু নিজেদের যোগ্যতা নাই কোন পলিসি আবিস্কার করার সেহেতু অন্যায় করার সুযোগ আপনাকে দিবো না। দলকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে আপনারা যদি কোনো ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নিবেদিত কর্মীরা জবাব কি দিবে সেটা সময়ই বলে দিবে।