ওরা আমাকে ছাড়লো না
স্টাফ করেসপনডেন্ট || নিউজ নারায়ণগঞ্জ ১২:০৪ এএম, ৮ অক্টোবর ২০২১ শুক্রবার

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ সেলিম ওসমান বলেছেন, আমরা যখন সাধারণভাবে কথা বলতে চাই তখন হয়তো সেই কথার মর্ম অনেকে বুঝতে পারে না। কথার মর্ম না বুঝে অন্য প্রসঙ্গে চলে যায়। তাতে কি হয়? সাধারণ মানুষের কোন উপকার হয় না। চোরের সাথে রাগ করে মাটিতে বসে ভাত খাওয়া যাবে না। বার বার আমি যদি রাগই হই, রাগতেই থাকি তাহলে কি হবে? রাগ করে তো সমস্যার সমাধান করা যায় না। এক টেবিলে বসতে হবে। সেই টেবিলে ঝগড়া হতে পারে। সেখানে থেকেই যেকোন সমস্যার সমাধান হবে। টেবিলে বসলে এমন কোন সমস্যা থাকে না যেটা সমাধান হবে না।
বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) বিকেলে ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিকেএমইএ’র কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে এই মন্তব্য করেন তিনি। এদিন বিকেএমইএ নির্বাচনে পূর্ণ প্যানেলে বিজয় সুনিশ্চিত হবার পর প্যানেলের সদস্যদের সাথে একত্রিত হন তিনি।
সেলিম ওসমান বলেন, নারায়ণগঞ্জের যানজট আমরা মুক্ত করতে পারছি না। মানুষ স্বাভাবিক ভাবে চলাচল করতে পারছে না। ফতুল্লা থেকে ঢাকায় যত সময় লাগে সেই ফতুল্লা থেকে নারায়ণগঞ্জ আসতে তার চেয়ে বেশী সময় লাগে। এগুলো আমরা সবাই ফিল করছি। রিক্সা, যানজট, ট্র্যাফিক ভোগান্তি আছেই। সামান্য বৃষ্টি হলে মানুষের অনেক অসুবিধা হচ্ছে। আমরা এসব মেনে নিতে পারলেও বাইরে থেকে প্রতিদিন ৫০/৬০ জন বায়ার নারায়ণগঞ্জ আসে। একজন বিদেশী লোক এসে যদি ঠিকমত খেতে না পারে, তার আসতে যদি জ্যাম পোহাতে হয় কিংবা নারায়ণগঞ্জে যদি তার ৪ ঘন্টা সময় দিতে হয় তাহলে সেটা দুঃখজনক। তারপরেও প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ যে লিংক রোডের কাজ হচ্ছে। রোড বড় হচ্ছে, আস্তে আস্তে সবই ঠিক হবে। তবে আমাদেরকে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। এটা আমার আবেদন সবার কাছে।
ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা হিসেবে সিটি করপোরেশনের কাছে কোন চাওয়া আছে কিনা তা জানতে চাইলে বলেন, সিটি করপোরেশন নিয়ে আমার বলার কিছু নাই। যার নিজস্ব দায়িত্ব সে নিজের মত পালন করবে। তবে একটা সরকার, সিটি মেয়র কিংবা ইউপি মেম্বার চিন্তা করে তার এলাকায় অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে হবে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ছাড়া কোন পথ নেই। এর জন্য রাস্তাঘাট ক্লিন করতে হবে। কিন্তু দিনে দিনে দেখা যাচ্ছে রাস্তাতেই যানজট তৈরী হচ্ছে। আমি কাউকে কটাক্ষ করে বলছি না। এটা আমাদের অপারগতা। তবে আমাদের আরেকটু মনযোগী হতে হবে। সামনে নির্বাচন, মেয়র পদে পুরোনো জন নতুন হয়ে আসতে পারেন আবার নতুন কেউ আসতে পারেন। আমাদের একটু অপেক্ষা করতে হবে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক ও অপরাজনীতির কারণে নারায়ণগঞ্জ বার বার পিছিয়ে যাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জে যদি সবাই একত্রে কাজ করে তাহলে এই শহর হবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনকারী শহর। সবার কাছে অনুরোধ থাকবে, রাজনীতি রাজনীতির জায়গায় থাকুক। কোন অবস্থাতেই ব্যবসার মধ্যে রাজনীতি টেনে আনবেন না। আমরা বিকেএমইএ ভবন তৈরী করতে গিয়েও বাধার সম্মুখীন হয়েছি। সামনে নারায়ণগঞ্জে নির্বাচন। আমরা চাইনা কোন কথার প্রেক্ষিতে শহরে অরাজকতা তৈরী হোক। সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক আমরা সেটিই চাই।
৬ষ্ঠ বারের মত নির্বাচিত হয়ে নিজের অনুভুতি প্রকাশ করে বলেন, আমরা বিকেএমইএ নির্বাচনে ২ দিন ফরম বিক্রি করেছি। প্রথম দিন আমরা কোন ডিরেক্টরকে এখানে প্রবেশ করতে দেইনি। শুধুমাত্র ইলেকশন কমিশন তাদের কার্যক্রম চালিয়েছে। আমিও অন্যত্র অবস্থান করেছি যাতে কেউ যেন ভয় না পায় এবং নিশ্চিন্তে মনোনয়ন ক্রয় করতে পারে। কিন্তু তারা এবারও আমাকে ছাড়েনি। প্রতিটা মেম্বারই চাইলো এই করোনাকালীন দুর্যোগ শেষে পূর্বের কিছু কাজের মূল্যায়নে ৬ষ্ঠ বারের মত সভাপতি নির্বাচিত করলো। চেষ্টা করবো যেন আগের থেকে আরও বেশী অগ্রগামী ভূমিকা রাখতে পারি।