ফতুল্লা পাইলট ও সেহাচর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রবেশ পথে হাঁটু পানি

ফতুল্লার প্রাচীন বিদ্যাপীঠ এবং নামকরা স্কুল হিসেবে পরিচিত ফতুল্লা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়। প্রায় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী এই স্কুলে পড়াশোনা করে। একই স্থানে রয়েছে সেহাচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। দুটি স্কুলের প্রবেশ পথ একই। কিন্তু গত দুই বছর ধরে বর্ষা মৌসুম থেকে শুরু করে বছরের প্রায় ৬ মাস পানিতে ডুবে থাকে স্কুলের প্রবেশ পথ। ফলে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল খুলে দেয়ার পর ছাত্র ছাত্রীদের কতটা ভোগান্তির মুখে পড়তে হবে তা ভেবে চিন্তিত স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাবৃন্দ।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জলাবদ্ধ স্কুল গেটের ছবি ছড়িয়ে পরে। সরেজমিনে স্কুলের সামনে গিয়েও এর সত্যতা মেলে। তবে ছবির চাইতে আরও করুণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে স্কুলের চতুর্দিকে। গোড়ালি থেকে শুরু করে হাঁটু সমান পানি জমে আছে স্কুলের আশেপাশের রাস্তায়। রিকশা ব্যতিত কোন মানুষই পা না ভিজিয়ে স্কুলে প্রবেশ করতে পারবেন না। অথচ বছর ৩ পূর্বেও এমন স্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখেননি এলাকার মানুষজন।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ২ বছর ধরে এই জলাবদ্ধতা প্রায় স্থায়ী রূপ ধারণ করেছে। কোনভাবেই সরছে না পানি। কারণ হিসেবে বলছেন, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথ ডাবল লেনে উন্নীতকরন প্রকল্পে পানি নিষ্কাষনের পথ সরু করে ফেলা হয়েছে। এতে করে পানি স্বাভাবিক গতিতে সরতে পারে না। চলতি বর্ষা মৌসুমের পূর্বেও পুরো এলাকার সকল ড্রেন পরিষ্কার করে রাখা হলেও তাতে কোন সুফল আসেনি। বর্ষা মৌসুম শেষে শরৎকাল চলে এলেও পানি কমার কোন লক্ষন নেই।
ফতুল্লা পাইলট স্কুলের শিক্ষিকা চায়না রানী বলেন, আমাদের তো রিকশা ছাড়া স্কুলে প্রবেশের কোন উপায় নেই। প্রতিদিন বাড়তি ভাড়া দিয়ে স্কুলে আসতে হচ্ছে সবাইকে। অনেক ক্ষেত্রে রিকশা চালকরাও আসতে চায় না। কদিন পর স্কুল খুললে বাচ্চারা আসা শুরু করবে। এই পানিতে পা ভেজালে বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে যাবে।
একই অভিযোগ করে স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক আব্দুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই স্কুলের সামনে নর্দমা আর বৃষ্টির পানি জমে আছে। আমাদের চলাফেরায় অনেক সমস্যা হয়। রিক্সা দিয়েও অনেক সময় চলাচল করা যায়না। ছাত্রছাত্রীদের ভোগান্তির কোন শেষ নেই। তারা যখন এসাইনমেন্ট জমা দিতে আসে তখনও এই ভোগান্তি পোহাতে হয় তাদের। ১২ তারিখ থেকে যখন সব খুলে দেয়া হবে তখন এই কষ্ট হবে বর্ননাতীত। নোংরা আর দুর্গন্ধযুক্ত পানির অবসান কবে হবে তাও আমরা জানিনা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী নজরুল বলেন, আমার দোকান গত ২ বছর ধরে শুধু লোকসানের দিকে। পানির কারণে কাস্টমার আসেনা। স্কুলটাও বন্ধ। আমি সকাল থেকে দোকান খুলতেই পারিনা। বিকেলের পর থেকে দোকান খুলে বসে থাকলেও কোন কাস্টমার পাইনা। অথচ এই স্থানে দোকান নেয়ার জন্য আগে মানুষ প্রতিযোগীতা করতো।
ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান স্বপন বলেন, এই রাস্তায় আগেও পানি ছিলো না। কিন্তু রেলওয়ে পানি সরে যাওয়ার রাস্তা আটকে দেয়ায় সেই পানি সরছে না। আমরা কয়েকবার এটা নিয়ে অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু তারা কোন আমলে নেয় না। আমরা যেমন ইসদাইরে তাদের কালভার্টের বাঁধ সরিয়ে দিতে পেরেছি আপনাদের লেখালেখির কারনে। তেমনি এইখানেও আপনাদের সহায়তা দরকার। আমরা কদিন আগেও আমরা ড্রেন পরিস্কার করেছি। কিন্তু রেলওয়ের কারনে কোন কিছুই কাজে আসছে না।