ছবিতে নারী সহ সোনারগাঁও যাদুঘরের সাবেক পরিচালক রবীন্দ্র গোপ


স্পেশাল করেসপনডেন্ট | প্রকাশিত: ০১:৫৩ পিএম, ১৩ জুন ২০১৯, বৃহস্পতিবার
ছবিতে নারী সহ সোনারগাঁও যাদুঘরের সাবেক পরিচালক রবীন্দ্র গোপ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের সদ্য সাবেক পরিচালক কবি রবীন্দ্র গোপকে অসামাজিক কার্যপলাপের অভিযোগে নারী সহ আটক করা হয়েছে। ১৩ জুন বৃহস্পতিবার দুপুরে যাদুঘরের ভিতরে ডাকবাংলো থেকে স্থানীয়রা তাকে আটক করে।

এই ঘটনায় খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নারীসহ রবীন্দ্র গোপকে আটক করে থানা হেফাজতে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ওই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। আটককৃত রবীন্দ্র গোপের বিরুদ্ধে এর আগেও অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ ছিল বলে স্থানীয়রা জানান। তিনি তার অফিসের পিছনেই একটি বেডরুম তৈরি করে সেখানে নারী নিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের সাপ্তাহিক ছুটি ছিলো। বেলা ১২টার দিকে প্রায় ২৫ বছর বয়সী এক নারী সন্দেহজনক ভাবে ডাকবাংলোর কক্ষে প্রবেশ করে। সেখানে আগে থেকেই রবীন্দ্র গোপ অবস্থান করেছিল। ভিতরে প্রবেশের পরেই তারা দরজা বন্ধ করে দেয়। তাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের সময়ে বাহিরে লোকজনের অবস্থান টের পেয়ে সাবেক পরিচালক রবীন্দ্র গোপের সহযোগিতায় ওই নারী কৌশলে পকেট গেইট দিয়ে দৌড়ে পালাতে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের হাতে ধরা পরে। পরে পুলিশে খবর দিলে সোনারগাঁও থানার এস আই আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে রবীন্দ্র গোপ ও সোনিয়া আক্তার মীম নামে ওই নারীকে আটক করে থানা হেফাজতে নিয়ে যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাদুঘরের এক কর্মকর্তা জানান, গত বুধবার রাতে রবীন্দ্র গোপের বড় ছেলের শ্বশুর মারা যান। সংবাদ পেয়ে তার ২ ছেলে ও নাতিরা সেখানে চলে যায়। এ সুযোগে রবীন্দ্র গোপ সকালে একটি মেয়েকে ডেকে নিয়ে যায় জাদুঘরের ডাক বাংলোতে। বিষয়টি স্থানীয় লোকজনের চোখে পড়ে। দীর্ঘ সময় মেয়েটি ডাকবাংলো থেকে বের না হওয়ায় তারা সেখানে গিয়ে অসামাজিক কার্যকালাপের সময় হাতে নাতে রবীন্দ্র গোপকে আটক করে পুলিশে দেয়।

সোনারগাঁও থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আলমগীর হোসেন ও এসআই আবুল কালাম আজাদ জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের সদ্য সাবেক পরিচালক কবি রবীন্দ্র গোপ ও মীম আক্তার নামে এক নারীকে আটক করেছি। প্রাথমিকভাবে তারা তাদের দোষ অস্বীকার করলেও পরে জিজ্ঞাসাবাদে উভয়ে এলোমেলো বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। তাদেরকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।

এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, এর আগেও রবীন্দ্র গোপের বিরুদ্ধে একাধিক নারী কেলেঙ্কারীর জোরালো অভিযোগ উঠেছিলো। কিন্তু তিনি জাদুঘরের পরিচালক হওয়ায় ক্ষমতার দাপটে সবকিছু থামা চাপা দিয়ে রেখেছিলেন।

আটককৃত রবীন্দ্র গোপ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থানার উকমাইল গ্রামের মৃত উপেন্দ্র গোপের ছেলে ও সোনিয়া আক্তার মীমের বাড়ি সোনারগাঁয়ের সাদিপুর ইউনিয়নের কাঠালিয়াপাড়া গ্রামে।

অভিযুক্ত কবি রবীন্দ্র গোপ জানান, মেয়েটি আমার পূর্ব পরিচিত। সে ডাক বাংলোতে আমার ছেলের গর্ভবতী স্ত্রীকে দেখতে এসেছিলেন। আমার ছেলের স্ত্রীকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে তাই দেখা হয়নি। ঘটনা এর বেশী কিছু নয়। মেয়েটিকে জড়িয়ে যা করা হয়েছে তা আমার বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।

উল্লেখ, গত ১৭ মে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক কবি রবীন্দ্র গোপের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ শেষ হয়। এদিন থেকে পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) হিসেব দায়িত্ব পালন করছিলেন মোঃ খোরশেদ আলম। পরবর্তীতে গত ৩ জুন বিসিএস প্রশাসনের উপপরিচালক ড. আহমদ উল্লাহ প্রেষনে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক পদে দায়িত্ব পেয়েছেন। এর আগে দায়িত্বে থাকা কবি রবীন্দ্র গোপ গত ১০ বছর আগে যাদুঘরে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান। এরপর কয়েক দফায় চুক্তি নবায়ণ করে তিনি ১০ বছর পার করে দেন। তার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও তিনি এখনো সরকারী বাংলোতে বসবাস করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন:
newsnarayanganj-video
আজকের সবখবর