মহানগর বিএনপি : পদত্যাগকারীদের আলাদা কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতি

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি থেকে পদত্যাগকারী নেতারা আলাদাভাবে কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। তারা নবঘোষিত কমিটির নেতাদের সাথে না থেকে আলাদাভাবে কর্মসূচি পালন করবেন। সেই সাথে নতুন কমিটির নেতাদের সাথে পাল্লা দিয়ে দলীয় কর্মসূচিতে নেতাকর্মী সমর্থকদের যোগান দিবেন পদত্যাগকারীরা। তারা দলীয় ঘোষিত প্রত্যেক কর্মসূচিতেই নিজেদের শক্তির জানান দিবেন।
পদত্যাগকারীদের নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা দলীয় ঘোষিত প্রত্যেক কর্মসূচিতেই সরব ভূমিকা রাখবেন। কোনো কর্মসূচিতেই তারা পিছপা হবেন না। বরং যারা মহানগর বিএনপির বর্তমান নেতৃত্বে এসেছেন তাদের সাথে পাল্লা দিয়ে নেতাকর্মী সমর্থকদের যোগান দিবেন। যে কোনো উপায়েই হোক তারা নিজেদের শক্তির জানান দিবেন। তবে সাখাওয়াত হোসেন খান ও আবু আল ইউসুফ খান টিপুর নেতৃত্ব কখনও মেনে নিবেন না।
এ ব্যাপারে আতাউর রহমান মুকুল বলেছিলেন, আমরা দলীয় ঘোষিত সকল কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবো। এক্ষেত্রে কারও কোনো বাধা নেই। আমরা নতুন কমিটিকে মানি না এইজন্য পদত্যাগ করেছি। কিন্তু বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেনি। দলীয় আন্দোলন সংগ্রামে আগেও ছিলাম এখনও আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকবো।
সেই সাথে আরেক পদত্যাগকারী নেতা অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম শিপলু বলেছিলেন, আমরা কেন্দ্রের দিকে তাকিয়ে আছি। আমরা সংঘবদ্ধ আছি। আমরা রাজপথের মানুষ। এই আল্টিমেটামে আমরা ভয় পাই না। এটাতে কোনো যায় আসে না। পদ থাকলেও আছি না থাকলেও আছি। এই আল্টিমেটামে কি আসে যায়?
দলীয় সূত্র বলছে, গত ১৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির ৪১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে অ্যাডভোকেট মো. শাখাওয়াত হোসেন খান এবং সদস্য সচিব হিসেবে অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
কিন্তু এই কমিটি ঘোষণার পর থেকেই নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপিতে বাজছে বিদ্রোহের সুর। মহানগর বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা কোনোভাবেই যেন এই কমিটিকে মেনে নিতে পারছেন না। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বইছে সমালোচনার ঝড়। কমিটি ঘোষণার পর থেকেই অনেকেই পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। যা কেন্দ্রীয় বিএনপিকেও অনেক বিব্রত অবস্থার মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
সর্বশেষ গত ১৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় জেলা ওলামা দলের সভাপতি মুন্সী শামসুর রহমান বেনু ও নিহত যুবদল নেতা শাওনের জন্য দোয়া ও মিলাদ অনুষ্ঠান শেষে মহানগর বিএনপির ১৫ জন নেতা পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
পদত্যাগকারী নেতারা হলেন- মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক পদে থাকা আব্দুস সবুর খান সেন্টু, হাজী নুরুদ্দিন, বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল ও সিটি কর্পোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবুল কাউসার আশা।
সেই সাথে সদস্য পদে থাকা পদত্যাগকারী নেতারা হলেন- আওলাদ হোসেন, হান্নান সরকার অ্যাডভোকেট বিল্লাল হোসেন, মনোয়ার হোসেন শোখন, আলমগীর হোসেন, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মোল্লা, শহীদুল ইসলাম রিপন, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মোল্লা, আমিনুর ইসলাম মিঠু, মো. ফারুক হোসেন ও অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম শিপলু।
তাদের এই পদত্যাগের পর এবার দলীয় কর্মসূচিও আলাদাভাবে পালনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে পদত্যাগকারী নেতারা তাদের অনুসারীদের নিয়ে সভাও করেছেন। এই সভায় কর্মসূচি পালনের পাশপাশি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের ব্যাপারে কেন্দ্রের কাছে অভিযোগ করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।