আল্টিমেটামেই সীমাবদ্ধ


স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | প্রকাশিত: ০৫:১১ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, বুধবার
আল্টিমেটামেই সীমাবদ্ধ

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি থেকে পদত্যাগকারী নেতাদের ব্যাপারে আল্টিমেটামেই সীমাবদ্ধ রয়েছেন আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু। পদত্যাগকারীদের ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়ার মতো এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি তারা। সেই সাথে সিদ্ধন্ত নেয়ার জন্য সাংগঠনিক কোনো প্রক্রিয়াও তাদের হাতে নেই।

নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি থেকে যারা পদত্যাগ করেছেন তারা এখন পর্যন্ত কেন্দ্রে লিখিত পদত্যাগ জমা দেননি। তারা শুধুমাত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মিডিয়ার মাধ্যমেই নিজেদের পদত্যাগের কথা জানিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত সাখাওয়াত হোসেন খান ও আবু আল ইউসুফ খান টিপু লিখিত কোনো পদত্যাগপত্র পাননি। যে কারণে তারা এখনই কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না।

সেই সাথে পদত্যাগকারীদের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে কেন্দ্রের নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আর কেন্দ্রীয় নির্দেশনা তখনই দিবেন যখন তারা লিখিত পদত্যাগপত্র পাবেন। যেহেতু এখন পর্যন্ত লিখিত কোনো পদত্যাগপত্র পাচ্ছেন না তাহলে নির্দেশনাও দিতে পারছেন না।

দলীয় সূত্র বলছে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির প্রথম সভা শেষে সাংবাদিক ব্রিফিংয়ে আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, কমিটি গঠন করার পর ১৪ জন পদত্যাগ করেছেন। কেন্দ্রের সাথে আলাপ আলোচনা না করেই তারা পদত্যাগ করেছেন। সেই সাথে তাদের পদত্যাগের পক্রিয়া আমাকে, দলকে, কেন্দ্রকে ব্যতীত করেছে। বহিষ্কৃত ব্যক্তি অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের বাসায় গিয়ে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছে। আমরা মনে করি সেটা সরকারের নীল নকশারই একটি অংশ।

তিনি আরও বলেন, যারা পদত্যাগ করেছে তারা ২৫ সেপেম্বর পর্যন্ত ২ টার মধ্যে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে এবং কেন্দ্রীয় কমিটির বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছেন সে সকল বক্তব্য প্রত্যাহার করে তাহলে ১১ জনের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না। তবে যে তিনজন মাস্টারমাইন্ড হিসেবে ১১ জনকে পদত্যাগরে জন্য বিভিন্নভাবে প্ররোচনা দিয়ে তাদের পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করলেও ফেরত নেয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কেন্দ্রে প্রস্তাব করা হবে। কেন্দ্র যে সিদ্ধান্ত দিবে সেটাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বলে গণ্য করা হবে।

তবে সাখাওয়াত হোসেন খানের এই আল্টিমেটামে কেউ পদত্যাগ পত্র প্রত্যাহারের আবেদনের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। একই সাথে মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু তাদের ব্যাপারে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পৌঁছতে পারেনি। পদত্যাগকারীরাও তাদের এই আল্টিমেটামকে কোনো পাত্তা দেননি।

এর আগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির ৪১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে অ্যাডভোকেট মো. শাখাওয়াত হোসেন খান এবং সদস্য সচিব হিসেবে অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

কিন্তু এই কমিটি ঘোষণার পর থেকেই নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপিতে বাজছে বিদ্রোহের সুর। মহানগর বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা কোনোভাবেই যেন এই কমিটিকে মেনে নিতে পারছেন না।

সর্বশেষ গত ১৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় জেলা ওলামা দলের সভাপতি মুন্সী শামসুর রহমান বেনু ও নিহত যুবদল নেতা শাওনের জন্য দোয়া ও মিলাদ অনুষ্ঠান শেষে মহানগর বিএনপির ১৫ জন নেতা পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

পদত্যাগকারী নেতারা হলেন- মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক পদে থাকা আব্দুস সবুর খান সেন্টু, হাজী নুরুদ্দিন, বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল ও সিটি কর্পোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবুল কাউসার আশা।

সেই সাথে সদস্য পদে থাকা পদত্যাগকারী নেতারা হলেন- আওলাদ হোসেন, হান্নান সরকার অ্যাডভোকেট বিল্লাল হোসেন, মনোয়ার হোসেন শোখন, আলমগীর হোসেন, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মোল্লা, শহীদুল ইসলাম রিপন, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মোল্লা, আমিনুর ইসলাম মিঠু, মো. ফারুক হোসেন ও অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম শিপলু।

আপনার মন্তব্য লিখুন:
newsnarayanganj-video
আজকের সবখবর