দীর্ঘদিন পর রোমাঞ্চে সেই নীলা
|| নিউজনারায়ানগঞ্জ২৪.নেট ০১:০১ এএম, ১ জানুয়ারি ২০১৫ বৃহস্পতিবার

অর্ক আহাম্মেদ : দীর্ঘদিন পর আবারো পরিবার পরিজন বিশেষ করে স্বামীর সান্নিধ্যে রোমাঞ্চকর সময় পার করেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা। স্বামী সায়েম প্রধান আর মেয়ে সুমাইতা সহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈদের ছুটিতে দীর্ঘ সময় পার করেছেন পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত বালুরাশির তীরের শহরে। প্রাণখুলে ঘুরে বেড়িয়েছেন, সমুদ্রের নোনা পানিতে মাতোয়ারা ছিলেন তিনি। নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার প্রধান আসামী নূর হোসেনকে গ্রেপ্তার ও একটি হত্যা মামলায় নীলা নিজেই কারাভোগ শেষে মানসিক প্রশান্তির কক্সবাজার ভ্রমণে সমুদ্র গর্জনের মতই বেশ উৎফুল্ল ছিল লাস্যময়ী।
নীলা নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর। কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাতজনের অপহরণ ও খুনের ঘটনার আসামী নূর হোসেন নিজে জান্নাতুল ফেরদৌস নীলাকে ‘রক্ষিতা’ করে রাখতে চেয়েছিলেন।
তবে ঈদ উল আজহার পর কক্সবাজার ভ্রমণের অনেক ছবি নীলা ও তার স্বামী আবু সায়েম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আপলোড করেছেন। সেখানে প্রচুর কমেন্টও পড়েছে। স্বামী আবু সায়েমের সঙ্গে নীলার অন্তরঙ্গ রঙিন ছবিগুলো বেশ আলোচিত হয়েছে।
ফেসবুকে একটি ছবির নিচে কমেন্ট পড়েছে - এসব ছবি পোস্ট করার একটাই কারণ সেটা হলো - নূর হোসেনের উপর জিদ করা। ওই জিদ থেকেই এসব ছবি পোস্ট করা হয়েছে।
অপর একটি ছবিতে কমেন্ট পড়েছে - নূরের লোলুপ দৃষ্টির কারণে দীর্ঘদিন স্বামী আবু সায়েমের সান্নিধ্য পাওয়ার সুযোগ হয়নি নীলার। এছাড়া নূর হোসেন গ্রেপ্তার ও পরে একটি মামলায় রিমান্ডে থাকার জন্য নীলাকে বেশ ধকল পোহাতে হয়েছিল। আগে যখনই সায়েমের সঙ্গে যাওয়ার প্রবল ইচ্ছে ছিল নীলার তখনই বাধ সেধেছিল নূর হোসেন। ইচ্ছের অমতে নীলাকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে যেত নূর হোসেন। তিনি চেয়েছিল নীলাকে রক্ষিতা বানাতে।
এর আগে নীলা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ‘বাবা হাজি আবদুল মোতালেবের রাজনীতির সুবাদে (৩০ বছর ধরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি) নূর হোসেনের সঙ্গে পরিচয়। তাকে চাচা ডাকতাম। ২০১২ সালের ১ ডিসেম্বর কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর তার সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ে। এ সময়ই তার লোলুপ দৃষ্টি পড়ে আমার ওপর।’
সেসময়ের রাজনৈতি চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে নীলা জানান, নূর হোসেন ‘প্যানেল মেয়র’ হিসেবে প্রতিদ্বন্ধিতায় নেমে নীলাকে তার প্রচারণায় নামায়। নূরের খপ্পরে পড়ে প্রতিদ্বদ্বী প্যানেল মেয়র প্রার্থী তার উকিল বাবা নজরুল ইসলামের (নিহত কাউন্সিলর নজরুল) বিপক্ষে চলে যান তিনি। নির্বাচনে নূর হোসেনের পরাজয় ঘটে। কিন্তু তিনি নীলার পিছু ছাড়েননি।
নীলা বলেন, ‘আমার বাবা হাজি আবদুল মোতালেব, স্বামী আবু সায়েমসহ আমার পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গেও সখ্যতা গড়ে তোলেন। না চাইলেও নানা ধরনের সহযোগিতার চেষ্টা করেন। সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন সভা-সমাবেশে যাওয়ার আগে বাড়ির সামনের রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে একসঙ্গে নিয়ে যেতেন।
প্রসঙ্গত গত ৮ আগস্ট প্রায় দুই মাস কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা। ২০১৩ সালের ২৬ অক্টোবর সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি এলাকা থেকে জুয়েল নামে এক ব্যক্তির খ-িত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পরদিন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জিন্নাহ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। পরে গ্রেপ্তারকৃত এক আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়। এতে হত্যার সঙ্গে নীলা জড়িত বলে স্বীকার করেন তিনি। এর প্রেক্ষিতে ২৬ মে পুলিশ নীলাকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে গত ১৮ মে নীলাকে সাত হত্যার প্রধান আসামি নূর হোসেন সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদে জন্য আটকের পর তাকে ছেড়ে দেয় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
