সামনে মিঠা পিছনে তিতা
স্টাফ করেসপনডেন্ট || নিউজ নারায়ণগঞ্জ ১০:৪৩ পিএম, ২১ অক্টোবর ২০২১ বৃহস্পতিবার

বন্দরের কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে আয়োজিত উঠান বৈঠকসমূহ উত্তেজনা ছড়িয়েছে জাপা ও আওয়ামী লীগে। পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আর কটাক্ষপূর্ন মন্তব্য করে নির্বাচনী মাঠ গরম করেছেন দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী। উভয়েই আবার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে নিয়েও সাজিয়েছেন রাজনৈতিক নাটক। তবে সামনা সামনি দেখা হয়ে একে অপরের সাথে কুশল বিনিময় সহ সৌহার্দ্যপূর্ণ মন্তব্য করে নিজেদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রমাণের চেষ্টা করেছেন।
২১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বন্দর উপজেলা পরিষদে নির্বাচনী কাজে এসেছিলেন কলাগাছিয়া ইউনিয়নের দুই হেভিওয়েট প্রার্থী। এদের একজন জাতীয় পার্টির দেলোয়ার হোসেন প্রধান ও অপরজন আওয়ামী লীগের কাজিম উদ্দিন প্রধান। দেখা হওয়ার পরপরেই একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন। কুশল বিনিময় সহ উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের শুনিয়ে শুনিয়ে দেলোয়ার প্রধান বলেন, কাজিম উদ্দিন প্রধান আমার বাবার মত। নির্বাচন শেষে আমরা দুজনেই এক। আমরা দুজনেই প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন কাজকে এগিয়ে নিতে চাই।
তার এমন বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণে কাজিম উদ্দিনও মুচকি হেসে তাতে সম্মতি জানান। তিনিও দেলোয়ার প্রধানের সাথে হাস্যরসে মেতে উঠেন। অথচ গত কয়েকদিন ধরে কলাগাছিয়ার বিভিন্ন স্থানে টানা পাল্টাপাল্টি মন্তব্য একে অপরের বিরুদ্ধে ছুড়ে দিচ্ছিলেন। আর সেই কারণে বন্দর উপজেলার সবচেয়ে আলোচিত নির্বাচনী এলাকা হয়ে উঠেছে কলাগাছিয়া। প্রার্থী থেকে শুরু করে বাসিন্দারাও বুঝে নিয়েছেন, বেশ হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে এই ইউনিয়নে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কলাগাছিয়া ইউনিয়নে দেলোয়ার প্রধান মূলত তার এলাকার রাস্তাঘাটের বেহাল দশা নিয়ে চিন্তিত। তবে প্রতিটি উঠান বৈঠক থেকে শুরু করে গণমাধ্যমকেও বলছেন সবকটি রাস্তার টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে ফান্ডে টাকার অভাবে সেই কাজগুলো শুরু হচ্ছে না। চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকেই আগামী বছরের শুরুতে এসব কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। তবে তার এই কথা অনেক বাসিন্দাদের কাছেই বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। আর সেই কারনেই পথ সুগম হয়েছে কাজিম উদ্দিন প্রধানের।
তবে কাজিমউদ্দিন তার নির্বাচনী প্রচারনায় যুক্ত করেছেন গ্যাস সংযোগের বিষয়টি। নিজে তিতাসের সিবিএ সভাপতি হওয়ায় হাজারো গৃহিনীকে আশ্বাস দিচ্ছেন নির্বাচিত হলে বৈধ গ্যাস এনে দিবেন। আর এতেই ক্ষুব্ধ দেলোয়ার প্রধান। বর্তমানে বৈধ সংযোগ দেয়া হয়না দাবী করে নিয়মিত বিষেদগার করে যাচ্ছেন কাজিম উদ্দিনের। আর কাজিম উদ্দিনও তার রাস্তার দুরবস্থা নিয়ে নিয়মিত দেলোয়ারকে লজ্জা দেন ভোটারদের সামনে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেলোয়ার প্রধান তার মিষ্টি কথায় প্রতিপক্ষকে ভুলিয়ে রাখতে পারেন। তার ছলচাতুরির খপ্পরে পরার দাবী করেছেন খোদ উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ রশিদ। আর তারই অংশ হিসেবে উপজেলায় জড়িয়ে ধরে মিষ্টি কথায় প্রতিপক্ষকে ভুলিয়ে রাখতে চেষ্টা করেছেন। বাস্তবে কাজিম প্রধান যে তার মাথাব্যথা হিসেবে আবির্ভুত হয়েছেন তা একেবারেই পরিস্কার।