বিএনপির রাজনীতি নিয়ে হতাশ মাসুকুল রাজীব (ভিডিও)
স্পেশাল করেসপনডেন্ট || নিউজ নারায়ণগঞ্জ ০৮:৪০ পিএম, ১৭ মার্চ ২০২০ মঙ্গলবার

নিউজ নারায়ণগঞ্জ এর ফেসবুক পেইজের লাইভ টক শো ‘নারায়ণগঞ্জ কথন’ অনুষ্ঠানের এর ৬৩তম পর্বে আলোচনার বিষয় ছিল নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত ও ভবিষ্যৎ নিয়ে।
সোমবার (১৬ মার্চ) নিউজ নারায়ণগঞ্জ এর ফেসবুক পেইজের লাইভ টক শো ‘নারায়ণগঞ্জ কথন’ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদ্য বিলুপ্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রজীব।
এসময় কমিটির ব্যর্থতার কারণে তা বিলুপ্ত করা হয়েছে কিন প্রশ্ন করা হলো মাসুকুল ইসলাম রাজীব বলেন, কমিটির মেয়াদ অতিক্রম হয়েছিল তাই কমিটি ভাঙাগড়া এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দলীয় কার্যক্রম পরিচলনা করার সুযোগ অনেক কম। তারপরও সংগঠনের স্বার্থে পরিস্থিতি যতই কঠিন হোক সাংগঠনের দায়িত্বে যারা আছে তাদের কাজ করে যেতেই হয়। কেন্দ্রেীয় নেতৃবৃন্দের হয়তো বা মনে হয়েছে কমিটি পরিবর্তনের দরকার। সে কারনেই মনে হয় তারা কমিটি বিলুপ্ত করেছেন।
দলের প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রাজীব বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি যে অবিচার জুলুম যা নিরবে আমরা সহ্য করছি এটার খেসারত আমাদের দিতেই হবে। এখানে সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে হলে সংগঠিত হয়ে সংগ্রাম করতে হবে। একক, ব্যক্তিগত বা একটি নির্দিষ্ট জেলা অনেক কিছু করে ফেলবে এরকম কোন সুযোগ নাই। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য যে ভূমিকা বিএনপির রাখা উচিত ছিল আমার ব্যক্তিগত মতামত থেকে বলতে পারি সে ক্ষেত্রে আমি হতাশ। আমাদের অনেক কিছু করার সুযোগ ছিল যেটা আমরা করতে পারছি না। বিরোধী দলের উপরে জুলুম সব সময়ই ছিলো। কখনো কম কখনো বেশি। এই অগণতান্ত্রিক সরকারের আমলে জুলুমের পরিমান অনেক বেশি। বাংলাদেশের কোন রাজনৈতিক সংগঠন কখনো এরকম জুলুমের সম্মুখীন হয়নি। ন্যায় বিচার, আইনের শাসন এখন নেই বললেই চলে। বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন এটা বিশ্বাস করা বোকার স্বর্গে বাস করার মতো। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে দেশনেত্রীর উপর জুলুম চালানো হচ্ছে। এটা রাজনৈতিক ভাবে মোকাবেলা করতে হবে এবং এটা বিএনপিকেই করতে হবে। এখন বিএনপি কেন করতে পারছে না, কেন এরকম সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে সেকারণে সাধারণ কর্মী হিসেবে আমি অনেক হতাশ। আমার মতো এরকম হাজারো নেতাকর্মী বেগম জিয়ার জন্য কিছু করতে চাই। কিন্তু করার জন্য একটি ক্ষেত্র প্রয়োজন, লিডার শিপ প্রয়োজন, সংগঠিত হওয়া সেই সাথে আন্তরিকতার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ করা প্রয়োজন এগুলোর যথেষ্ট অভাব আছে নাই বললেই চলে। যখন জেলা কমিটি ২৬ জনের ছিল তখন তারা একসাথে বসতে পারে নাই। যখন বেগম জিয়া জেলে বন্দি এরকম পরিস্থিতিতেও বা নির্বাচনের আগেও ২৬ জন একত্রিত হতে পারে নাই। বসার উদ্দ্যোগ গ্রহন করা হয় নাই। ডাকার পরও যদি না আসে তার বিরুদ্ধে যে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে সেটাও নেয়া হয় নাই। সংগঠন করতে হলে সংগঠনের দায়বদ্ধতার প্রয়োজন আছে। আমার উপর যদি দায়িত্ব দেয়া হয় এবং সেটা যদি আমি সঠিক ভাবে না করতে পারি তাহলে জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে হবে। আমি যদি না পারি আমাকে বাদ দিয়ে অন্যজনকে দায়িত্ব দিতে হবে।
রাজীব আরো বলেন, শুধু কর্মসূচি করা রাজনীতিবীদের কাজ না। রাজনীতিটা প্রতিদিনের বিষয়, সংগঠনের প্রতিটি নেতাকর্মীর মধ্যে আন্তরিকতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করতে হবে। একটা মানুষতো বললেই আসবে না, চেতনা জাগ্রত করতে হবে।
অতীতে অস্ত্রের রাজনীতি করতেন এ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সরকার দলীয় সাংসদের সম্প্রতি সময়ের স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্য প্রসঙ্গ এবং আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজনীতির অবস্থা কেমন জিজ্ঞেস করা হলে রাজীব বলেন, আসলে উনি সত্য কথাটিই বলেছেন। আসলে সত্য যত কঠিন বা নির্মম হোক সত্য সব সময়ই সুন্দর। নারায়ণগঞ্জবাসী সাক্ষী একসময় নারায়ণগঞ্জে অস্ত্রের রাজনীতি ছিল। আমি নিজেও গুলিবিদ্ধ হয়েছি। ক্ষমতায় থাকাকালীন সময় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এই অস্ত্রের রাজনীতি বন্ধ করেন। আগে নিজ দলের সন্ত্রাসীদের তিনি দমন করেছেন। দেশনেত্রী এই কাজটি সম্পূর্ন সততার সাথে করেছেন। ২০০১ সালের পর থেকে অস্ত্রের রাজনীতি সম্পূর্ন বন্ধ হয়ে গেছে। এটা এখনো চলমান, অস্ত্রের রাজনীতি এখন বাংলাদেশে নাই।
রাজীব বলেন, যে মাননীয় সংসদ সদস্য এই কথাটি বলেছেন আমার কাছে মনে হয়েছে তিনি সত্য কথাটিই বলেছেন। হয়তো বা জমা দেওয়ার ব্যপারটি ভিন্ন কিন্তু অস্ত্রের রাজনীতি থেকে তিনি যে ফিরে আসছেন তাতে কোন সন্দেহ নেই। মানুষ মাত্রই পরিবর্তনশীল। এক সময় আমার মানসিকতা এক রকম ছিল আরেক সময় পরিবর্তন হবে এটাই স্বাভাবিক। যখন আমি পরিবর্তিত মানসিকতা লালন করবো তখন সেটাকে অবশ্যই সাধুবাদ জানানো দরকার। ২০০৮ এর পরে নারায়ণগঞ্জের যে প্রেক্ষাপট অবশ্যই তিনি তার জন্য ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। ৫ই জানুয়ারি পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সাথে বিএনপির গুলাগুলি এই একটা ঘটনা ছাড়া গত ১২ বছরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কোন রাজনৈতিক সংঘর্ষ এই নারায়ণগঞ্জে দেখি নাই। হে বিএনপির উপর পুলিশ অনেক মারমুখি, অত্যাচারি হয়েছে। বিএনপির উপর অত্যাচার জুলুম সব পুলিশ করেছে।