জামায়াত নিয়ে বিতর্কে বিএনপির কামাল ও আওয়ামী লীগের কাদির
সিটি করেসপনডেন্ট || নিউজ নারায়ণগঞ্জ ০৯:৩৯ পিএম, ২৯ অক্টোবর ২০১৮ সোমবার

জামায়াতে ইসলামী সহ অন্যান্য ইসলামী নামধারী সন্ত্রাসীরা ত্রাস সৃষ্টি করে। এসব দল থাকে বিএনপির অন্তরালে। তাই তাদের নাম কম আসে। সামনে বিএনপি থাকায় তাদের নামে মামলা বেশি। তবে ইন্দন এবং অন্তরালে থেকে জামায়াত মূলত কর্তৃত্ব দেখায়। তাই তাদের চেহারা দেখা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবদুল কাদির।
অপরদিকে এর বিরোধীতা করে মহানগর বিএনপির সেক্রেটারী এটিএম কামাল বলেছেন, অন্তরালের বিষয়টি আওয়ামী লীগ ভালো জানে। অন্তরালে জামায়াতের সঙ্গে সরকারের আঁতাত থাকায় তারা মামলা শিকার হচ্ছে না। জামায়াত তাদের সঙ্গে না থাকলে জঙ্গী হয়ে যায়। অথচ তত্ত্বাবধায়কের দাবিতে জামায়াত-আওয়ামী লীগ এক সঙ্গে আন্দোলন করেছে। তখন জামায়াত নাচতে নাচতে মিছিল করেছে নারায়ণগঞ্জে।
২৮ অক্টোবর রোববার রাতে নারায়ণগঞ্জে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে নিউজ নারায়ণগঞ্জের বিশেষ লাইভ টক শো ‘নারায়ণগঞ্জ কথন’ এ আলোচক হিসেবে একথা বলেন তারা। নারায়ণগঞ্জ কথনের ৪৯ তম পর্বে বিষয় ছিল ভোটের লড়াই। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন আরিফ হোসাইন কনক।
এটিএম কামাল বলেন, জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হলেও ভোটাধিকার রয়েছে। তবে অনেকের যুদ্ধপরাধী হিসেবে সাজা, ফাঁসি হয়েছে। কিন্তু যারা এই প্রজন্মের তারা তো যুদ্ধাপরাধী না। যারা ছিল তারা সাজা পেয়েছে। সেই চ্যাপটার শেষ। জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির প্রকাশ্য জোট আছে। আওয়ামী লীগের মত অন্তরালের কোন আঁতাত নেই।
একথা স্পষ্ট জামায়াতের সঙ্গে রাজনীতি শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। তখন নিজামী-মুজাহিদের সঙ্গে একসঙ্গে বসে বৈঠক করেছে আওয়ামী লীগের বাঘা বাঘা নেতারা। তখন যুদ্ধাপরাধীর অভিযোগ কোথায় ছিল। যখন প্রয়োজন তখন তাদের ব্যবহার করেছে। যখন তারা ছেড়ে আসলো তখন তাদের যুদ্ধাপরাধী বানিয়ে ফাঁসির মঞ্চে ঝুলিয়ে দিয়েছে। এটাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির আসল চেহারা।
তিনি বলেন, আমাদরে উপর প্রতিহিংসার রাজনীতি চলছে। আওয়ামী লীগের উপর হামলা হলে আমরা কষ্ট পাই। আমাদের উপর কিছু হলে তাদের মধ্যে অনেকেই কষ্ট পায়। এজন্য অনেকে বলে রাজনীতি আমাদের হাতে নাই। বর্তমানে আওয়ামী লীগের রাজনীতি আওয়ামী লীগারদের হাতে নাই। বিষয়টি কষ্টের।
কামাল ভাইয়ের মত মানুষ ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে থেকে রাজপথে রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করছেন বলে মন্তব্য করেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবদুল কাদির। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জামায়াতের সঙ্গে কোন দিন আন্দোলন হয়নি, হবেও না। জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগ বসিও নাই। বসার প্রশ্নেই উঠে না। তবে হেফাজতের বিষয়টি ভিন্ন। তারা যে আন্দোলন করেছে কওমী মাদ্রাসার কারিকুলাম নিয়ে এটা তাদের ন্যায্য দাবি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শামীম ওসমান যে সমাবেশ করেছে তা তার ব্যাক্তিগত সমাবেশ। আমাদের জেলা ও মহানগরের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ছিল না, কেউ ছিল না। সে সমাবেশ বৃহত্তম নাকি তা দেখতে পাইনি। যেহেতু আমাদের দাওয়াত দেয়া হয়নি। দেখবো কী করে। তবে জমায়েত হয়েছে।
জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে আবদুল কাদির বলেন, বিএনপি ঠিকই নির্বাচনে যাবে এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। সবাই আসবে কিছু হয়তো দলছুট হতে পারে।
মহানগর বিএনপির সেক্রেটারী এটিএম কামাল বলেন, বিএনপির কোন নেতাকে আওয়ামী লীগ দলছুট করতে পারে নাই। এটা পারবেও না। মোরে যাবে তারপরও দল ছাড়বে না বিএনপির নেতারা। রক্তদিব তার পরও পিছিয়ে যাবো না বলে বলিষ্ঠ কন্ঠে বলেন তিনি।
আন্দোলনে বিএনপি বাস পোড়ায়নি। আওয়ামী লীগ পুড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেন কামাল। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিগত দিনের আন্দোলনে ভাল বাস পোড়ানো হয় নাই। ভাঙ্গাচোড়া বাস পোড়ানো হয়। আবার ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা হয়েছে। অনেক সময় একই বাস কয়েকবার পোড়ানো হয়। এ সবই আওয়ামী লীগের কর্ম বলে প্রতিয়মান। তাই খালেদা জিয়া আন্দোলনের বিষয়ে সচেতন থাকতে বলেছেন। যাতে আন্দোলন নিয়ে ষরযন্ত্র করতে না পারে। কারন তারা নিজেরা বাস পুড়িয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়।
তিনি বলেন, বিএনপির সময় আওয়ামী লীগ রাজপথে দাপিয়ে বেড়িয়েছে। আনোয়ার ভাই চেয়ার নিয়ে পার্টি অফিসের সামনে বসে হরতাল করেছেন। বিএনপি বাধা দেয়নি। অথচ আমরা গুলি খাই। আন্দোলনে নামলেই পুলিশ সরাসরি গুলি চালাচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে এটিএম কামাল বলেন, বিএনপিতে দলীয় কোন্দল নাই। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে বিরোধ থাকলে সেটা বলতে পারতেন। সহ-সভাপতি অনেক থাকে। এটা ধর্তব্য বিষয় না। অনেকে তাদের শক্তি প্রদর্শন করার জন্য শো-ডাউন করে। এটা রাজনীতির সংস্কৃতি। এটা মাইনাস মনে করি না। এমন দশটা করলেও কোন সমস্যা নাই। মূল ধারার বাইরে গিয়ে শো-ডাউন করতে পারে। এতে দলের শক্তি আরো বাড়ে বলে মন্তব্য করেন তিনি।