পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে করোনা হাসপাতালে তরুণের স্বেচ্ছাশ্রম
স্টাফ করেসপনডেন্ট || নিউজ নারায়ণগঞ্জ ০৯:২০ পিএম, ১০ জুন ২০২০ বুধবার

‘করোনা হাসপাতালে ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করার জন্য আমাকে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হতে হয়েছে। আমি যেদিন থেকে করোনা হাসপাতালে ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করতে শুরু করেছি। সেদিন থেকে আমি একা থাকতে শুরু করেছি। ঈদের সময় আমি নমুনা পরীক্ষা করিয়েছিলাম। নেগেটিভ আসার পর পরিবারর সাথে ঈদ পালনের জন্য কয়েকদিন থেকেছি। এরপর থেকে আবারো করোনা হাসপাতালে ভলান্টিয়ার হিসেবে যোগদানের পর পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছি। এখনো পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন আছি।’
৯ জুন মঙ্গলবার রাত ১০টায় নিউজ নারায়ণগঞ্জের ফেসবুক লাইভ টকশো ‘করোনা হাসপাতালে ঝুঁকি নিয়ে তরুণদের স্বেচ্ছাশ্রম’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন করোনা হাসপাতালে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কর্মরত বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান রিচার্ড। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলার অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ফারহানা মানিক মুনা। উপস্থাপনায় হাফসা আক্তার।
নারায়ণগঞ্জ করোনা হাসপাতালে ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে রিচার্ড বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে এমনিতেই চিকিৎসা বা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা যে ভঙ্গুর দশা সেটি দুর্যোগকালে দেখতে পেলাম। পত্রপত্রিকা থেকে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে বাংলাদেশের কোথাও চিকিৎসা নেই। সেই যে চিকিৎসা নেই এই জায়গা থেকে মানুষের যে বিড়ম্বনা, হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। ছাত্র সংগঠন হিসেবে সেটির সমাধাণ করার চেষ্টা আমরা করছি।’
এসময় তিনি আরো বলেন, ‘করোনা হাসপাতালে তরুণ হিসেবে আমি একা না। আমার সাথে আরো অনেকে আছে। অনেকে কাজ করছে। এক তরুণ আছে যে করোনা হাসপাতালে ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়। পরবর্তিতে সে সুস্থ হয়ে আবারো কাজ করছে। করোনা হাসাপাতালে যারা করোনার নমুনা পরীক্ষা করাতে আসছেন। তাঁদেরকে আমি এবং আমার সহযোগী যারা আছেন তাঁরা সহযোগিতা করছি। মানুষের সেবা যাতে নিশ্চিৎ হয়। কোনো ধরণের বিড়ম্বনায় যাতে না পরেন সেই জায়গায় যতটুকু সম্ভব আমরা করার চেষ্টা করছি।’
ফারহানা মানিক মুনা বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ কাজ যেহেতু করছি সেহেতু একটি পারিবারিক অবস্থান সবারই আছে। পারিবারিক জটিলতার মধ্য দিয়ে আমাদের সবাইকেই যেতে হচ্ছে। পরিবকার কিন্তু করোনা ঝুঁকির বাইরে না। আমরা সবাই করোনা ঝুঁকির মধ্যে আছি এবং পরিবারও এর অংশ। ফলে সে দিনক থেকে আমাদের এই কাজগুলো পরিবারের জন্যও।’
তিনি বলেন, ‘তরুণরা নিজ নিজ এলাকায় এখনো করোনা মোকাবিলায় কাজ করছে। কিন্তু যেটা উচিৎ ছিল যে সব তকরুণদের একত্রিত করে একটি ফোর্স হিসেবে কাজ করা। সেটা হয়নি বরং স্বেচ্ছাসেবকদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে। এর থেকে বেরিয়ে সদি সকল স্বেচ্ছাসেবক যারা আছেন তাঁদের সুরক্ষা নিশ্চিৎ করে এবং যারা কাজ করছে না তাঁদেরকে উৎসাহিত করে একত্রে কাজ করলে এই করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করা আরো সহজ হবে। আমাদের সকলকে একে অপরের হাত ধরে শক্তিশালী হিসেবে কাজ করতে হবে। এবং তরুণরাই যেন এই মহামারি মোকাবিলায় মূল হাতিয়ার হিসেবে দাঁড়াতে পারে।’