‘নারায়ণগঞ্জস্থান গ্রুপ বন্ধ করে নারায়ণগঞ্জবাসীর ক্ষতি করে’
সিটি করেসপন্ডেন্ট || নিউজ নারায়ণগঞ্জ ০৮:০৬ পিএম, ১৫ জুন ২০২০ সোমবার

প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সব থেকে বেশি প্রয়োজন ছিল সচেতনতার। এমন পরিস্থিতিতে ঘর বন্দি মানুষের হাতের মুঠোয় নানান সচেতনতামূলক বার্তা ও সঠিক তথ্য প্রচারে বড় ভূমিকা পালন করেছেন সামাজিক যোগাযোম মাধ্যমগুলো। যেগুলোর প্রথম স্থানেই রয়েছে ফেসবুক। করোনাকে কেন্দ্র করে ফেসবুকে বেশকিছু গুজব ছড়ালেও সঠিক তথ্য প্রচারের সংখ্যাই বেশি। যে কারণে অনেকে ঝুঁকি এড়িয়ে নিজেকে সচেতন করতে পেরেছে।
নারায়ণগঞ্জবাসীর মধ্যে বেশ কিছু ফেসবুক গ্রুপ কাজ করলেও শুরু থেকেই মাঠ পর্যায়ে এসে কাজ করেছে শুধুমাত্র ‘নারায়ণগঞ্জস্থান’। ফেসবুকে প্রতিনিয়ত করোনায় নারায়ণগঞ্জের সবশেষ পরিস্থিতি, নানান চেতনামূলক বার্তার পাশাপাশি করোনাকালে গ্রুপটি মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক কাজ করেছে। করোনাকালের শুরু থেকে অসহায় পথশিশু ও ভাসমান মানুষের জন্য এক বেলার আহার দিয়ে শুরু করে, রমজান মাস জুড়ে ইফতার বিতরণ, কর্মহীন অসহায় পরিবারের মাঝে জরুরি খাদ্য সহায়তা, রোগীদের জন্য ওষুধ ও শিশুদের জন্য শিশু খাদ্যও বিতরণ করেছে এবং করে যাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জের যে কোন সংকটকালে এমন পদক্ষেপের কারণেই নারায়ণগঞ্জস্থান গ্রুপ নারায়ণগঞ্জে সর্বাধিক জনপ্রিয়তার খেতাব অর্জন করেছে। ফলশ্রুতিতে দুষ্ট লোকের ষড়যন্ত্রে করোনাকালীন কার্যক্রমের মধ্যে একবার সহ মোট তিনবার বন্ধ হয়েছে গ্রুপটি। তবে কোনো কিছুই তাঁদের দমিয়ে রাখতে পারেনি।
১৪ জুন রোববার রাত ১০ টায় নিউজ নারায়ণগঞ্জ ফেসবুক লাইভ টকশো ‘করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাব’ অনুষ্ঠানে উঠে এসেছে নারায়ণগঞ্জস্থানের এসব কার্যক্রম। উপস্থিত ছিলেন গ্রুপের এডমিন আরিফিন রওশন হৃদয়, এমএইচ অপু ও রিজওয়ান আমিন। উপস্থাপনায় ছিলেন হাফসা আক্তার।
অনুষ্ঠানে এমএইচ অপু বলেন, ‘আমাদের প্রাণশক্তি হচ্ছে মেম্বাররা। করোনার শুরুর দিকে নারায়ণগঞ্জকে যখন রেড জোন ঘোষণা করা হয় তখন থেকে মেম্বারদের সহায়তায় আমাদের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম দিকে পথশিশু ও সুবিধাবঞ্চিতদের এক বেলার আহার কার্যক্রম শুরু করি। পরবর্তিতে এক বেলার আহারের সাথে প্রতিদিন ইফতার বিতরণ, ৪৫০টি অসহায় পরিবারে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। রোগীদের জন্য ওষুধ এবং যারা আমাদেরকে বলেছে তাঁদের বাসায় শিশুদের জন্য দুধ বিতরণ করেছি।’
গ্রুপ বন্ধ হওয়া পরবর্তিতে কার্যক্রম প্রসঙ্গে রিজওয়ান আমিন বলেন, ‘করোনাকালীন কার্যক্রমের মধ্যে গ্রুপটি বন্ধ হওয়া বেশ বড় ধাক্কা ছিল। আমাদের ধারনায় ছিল না যে এমন কিছু ঘটতে যাচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য ছিল করোনার মধ্যে আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। গ্রুপটি চলে যাওয়ার কারণে প্রথম এক মাসের কার্যক্রম সফল ভাবে সম্পন্ন করতে পারলেও পরবর্তিতে আমাদের যে পরিকল্পনা ছিল সেইভাবে এগোতে পারছি না। আগের গ্রুপটিতে ৮০হাজার মেম্বার ছিল। এখন ৪০ হাজার মেম্বার। বাকি ৪০হাজার কিন্তু এখনো মিসিং। যে কারণে মেম্বারদের সাথে যোগাযোগে দূরত্ব তৈরী হয়ে গেছে। এটি আমাদের কার্যক্রমে বড় ধরণের ধাক্কা।’
এসময় তিনি আরো বলেন, ‘আমরা এখনো কনফিউজড যে কেন গ্রুপ বন্ধ হলো। এর আগের বার যখন গ্রুপ বন্ধ হয় তখন ফেসবুক থেকে ফিডব্যাক এসেছিল যে কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড না মানায় বন্ধ করা হয়েছিল। তবে এবার কোনো ফিডব্যাক আসেনি। আমরা যখন সাইবার এক্সপার্টদের দারস্থ হলাম তখন তাঁরা জানিয়েছেন যে কোনো স্প্যামারদের কাজ হতে পারে। কিন্তু কেন তাঁরা এমন করছে আমরা জানি না। গ্রুপ বন্ধ করে তাঁরা নারায়ণগঞ্জবাসীরই ক্ষতি করে। যে অসহায় মানুষগুলো আমাদের থেকে সুবিধা পায় তাঁদের ক্ষতি করেছে।’
গ্রুপ নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে আরিফিন রওশন হৃদয় বলেন, ‘গ্রুপটিকে আরো শক্তিশালী করে একটি শক্তিশালী হাতিয়া হিসেবে ব্যবহার করে নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য কিছু করার জন্য আমরা প্রতিটি ওয়ার্ড ভিত্তিক মডারেটর যুক্ত করবো। যেন নারায়ণগঞ্জবাসীর যে কোনো দুর্যোগে আমরা আরো ভালোভাবে কাজ করতে পারি।’