স্ত্রীর সেবা করতে গিয়েই করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন খোরশেদ
স্পেশাল করেসপনডেন্ট || নিউজ নারায়ণগঞ্জ ০৯:৩৬ পিএম, ১৮ জুন ২০২০ বৃহস্পতিবার

করোনা হিরো মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলেন, ‘করোনার শুরু থেকে আমি দীর্ঘ তিন মাস ধরে আলাদা থাকি। আমার স্ত্রী যখন করোনা পজেটিভ হলো আমার বাচ্চারা ছোট এবং অভিভাবক বলতে আর নাই। এই জন্য তাঁকে (খোরশেদের স্ত্রী) সাহস যোগানোর জন্য, সেবা করার জন্য তাঁর সাথে থাকতে হয়েছে। লুনার সাথে থাকার তিন দিনের মাতায় আমারও করোনা পজিটিভ আসে। আমার করোনার লক্ষণ বলতে জ্বর আর প্রচন্ড শরীর ব্যাথা ছিল।’
নিউজ নারায়ণগঞ্জের ফেসবুক লাইভ টকশো ‘করোনার সঙ্গে লড়াই’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেছেন করোনা হিরো ১৩ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। অনুষ্ঠানে খোরশেদ পত্মী আফরোজা খন্দকার লুনা। উপস্থাপনায় ছিলেন সনদ সাহা সানি।
এসময় তিনি আরো বলেন, ‘কারো বাসায় যদি কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়। তাহলে অতিরিক্ত আবেগ দেখিয়ে কেউ এক সাথে থাকতে যাবেন না। তাঁকে অবশ্যই আলাদা আইসোলেশনে রাখবেন। এক সাথে থাকলে নিশ্চিত করোনায় আক্রান্ত হবেন। এর প্রমাণ হচ্ছি আমি।’
খোরশেদ এবং খোরশেদের স্ত্রী করোনা পজেটিভ আসার পরে সন্তানের সুরক্ষা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রথম দুইদিন আমার সন্তানেরা আলাদা রুমে ছিল। পরবর্তিতে তাঁদের নানির বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমার সন্তানেরা আমার কাছ থেকে প্রথম থেকেই আলাদা থাকায় তাঁদের মনের মধ্যে প্রস্তুতি ছিল। পরবর্তিতে যখন তাঁদের মা অসুস্থ হয় তখন তাঁরা অনেক কান্নাকাটি করেছিল। ওদের মা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর যখন ওরা বার বার ওদের মায়ের কাছে যেতে চাইছিল তখন জোর করেই দুইদিন পরে ওদের নানির বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অবস্থা থেকে আবারো সুস্থ হয়ে ফিরে আসা নিয়ে খোরশেদের স্ত্রী আফরোজা খন্দকার লুনা বলেন, ‘শুরু থেকেই ওর (স্বামী খোরশেদ) সাথে ছিলাম। করোনা মোকাবিলায় ওর কাছ থেকেই সাহস পেয়েছি।’
এসময় তিনি আরো বলেন, ‘আমি সুস্থ হওয়ার পরেও যখন ওর পজিটিভ ছিল তখন আমার কাছে খুব খারাপ লেগেছে যে আমার কারণেই ও আক্রান্ত হয়েছে। প্রতিদিন খোঁজ নিতাম যে সে ভালো আছে কি না। খাওয়া দাওয়া করছে কি না। টেস্ট করানো হয়েছে কি না।’
করোনাকালে খোরশেদের নানান কার্যক্রম প্রসঙ্গে খোরশেদ পতœী লুনা বলেন, ‘শুরু থেকেই আমরা তাঁর কাজে উৎসাহ দিয়ে গেছি। এটি অনেক মহৎ কাজ। এই কাজ করার সাহস সবার হয় না। ওর মধ্যে সেই সাহস আল্লাহ দিয়েছেন। আল্লাহই ওকে দিয়ে এই কাজ করাচ্ছেন।’