‘করোনা পরিস্থিতিতে কাজ করা ইউএনওকে দমানোর অপচেষ্টা’ (ভিডিও)

স্পেশাল করেসপনডেন্ট || নিউজ নারায়ণগঞ্জ ০৯:১১ পিএম, ২৯ জুন ২০২০ সোমবার

‘করোনা পরিস্থিতিতে কাজ করা ইউএনওকে দমানোর অপচেষ্টা’ (ভিডিও)

করোনাকালীন সংকটে বেশ আলোচিত নারায়ণগঞ্জ। সারা বাংলাদেশে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এর বাইরে নয় সোনারগাঁ উপজেলা। এ পর্যন্ত সোনারগাঁ উপজেলায় করোনায় সংক্রমণ শনাক্ত প্রায় সাড়ে চারশ। দশের উপরে মৃত্যু। এই যখন অবস্থা তখন সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় সোনারগাঁ উপজেলা বেশ আলোচিত হয়ে উঠেছেন। আর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম। তাঁকে নিয়ে কেন এত আলোচনা এবং সোনারগাঁয়ে বর্তমান করোনা পরিস্থিতি উঠে এসেছে নিউজ নারায়ণগঞ্জের লাইভ টকশোতে।

২৯ জুন সোমবার রাত সাড়ে ১০টায় নিউজ নারায়ণগঞ্জের লাইভ টকশো ‘সোনারগাঁও ও সচেতনতা’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম, জেলা পরিষদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম, প্রথম আলোর সংবাদদাতা মনিরুজ্জামান মনির ও সুজনের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মামুন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা যারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী আমরা জানি প্রতিকূলতা থাকতে পারে। এই প্রতিকূলতা এড়িয়ে জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে কাজ এগিয়ে নিয়ে যওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু এরকম একটি পদে থেকে যখন আমরা কাজ করি তখন কিছু মানুষ নাখোশ হতেই পারে। আমি যদি মাদকসেবী বা মাদকের চালান ধরি তাহলে নাখোশ হতে পারে। এরকম করতে পারে নির্দিষ্ট করে কাউকে মনে করি না।’

প্রথম আলোর সংবাদদাতা মনিরুজ্জামান মনির বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসন আর জনপ্রতিনিধির মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকার কথা না। কিন্তু দু’জনের মধ্যে একটি দূরত্বের খবর আমরা ইতোমধ্যে জানতে পেরেছি। এটা সোনারগাঁয়ে ওপেন সিক্রেট। সাধারণ মানুষ পর্যন্ত সেই বিষয় সম্পর্কে জানেন। তবে দু’জনের কেউ স্বীকার করেন না।’

তিনি আরো বলেন, ‘সাবেক ইউএনও রাকিবুর রহমান খান এখানে থাকা অবস্থায় এমন কোনো কাজ করেন নাই যে জনপ্রতিনিধিরা তাঁকে বয়কট করবে। এখানে নিশ্চয় কোন স্বার্থ জড়িত আছে। আমি যতটুকু জানি রাকিবুর রহমান ভালো মানের অফিসার। সে আসলো কয়েকদিন পর সে খারাপ। কি খারাপ? কয়েকজন তৃণমূল পর্যায়ের ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা ফোরাম করে রাকিবুর রহমানকে বয়কট করে। আমি জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলেছি যে এই লোকের অপরাধ কি? সে মাত্র আসলো। কেন সভা বয়কট করা হলো? কোনো জনপ্রতিনিধি উত্তর দিতে পারেনি।’

তিনি বলেন, ‘অল্প কিছুদিন পর পর সোনারগাঁও ইউএনও পরিবর্তন। সারা বাংলাদেশে কোথাও দেখিনি। এখনো শুনতে পাচ্ছি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেখতে পাচ্ছি অনেকে লিখছেন যে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সরে যেতে হবে। কিন্তু এর কারণ বা তাঁর অপরাধ আমার জানা নাই।’

মোস্তাফিজুর রহমান মামুন সোনারগাঁয়ে বিভিন্ন শিল্প কারখানায় স্থানীয় লোকজনদের চাকরি না পাওয়ায় স্থানীয় জনপ্রতিনিথিরা ব্যর্থ স্বীকার করেন।

তিনি এও বলেন, সংসদ সদস্যের সাথে যেরকম সম্পর্ক থাকার কথা সোনারগাঁ ইউএনওর সাথে সেরকম সম্পর্ক দেখছি না। সংসদ সদস্য এবং ইউএনওর মধ্যে দূরত্ব আছে। আমাদের এখানে চৈতি কম্পোজিটের দূষণের কারণে হাজার হাজার মানুষ ভুক্তভোগী। মাছের ক্ষতি হচ্ছে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। যে কারণে তাঁদের দূষণ রোধে আমরা যারা রাজনৈতিক ব্যক্তিরা ব্যর্থ। এর কারণে হতে পারে এখানে পর পর দুই টার্মে এখানে আওয়ামী লীগের কোনো সংসদ নেই। দলীয় কোনো সংসদ সদস্য যদি থাকতো তিনি হয়তো ভূমিকা নিতে পারতেন। তাই আরমা যেমন ব্যর্থ তেমনি সংসদ সদস্যও ব্যর্থ।’

মিজানুর রহমান মামুন বলেন, ‘ইউএনও সাইদুল ইসলামকে থামিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে এটা ফেসবুকে বিভিন্ন মন্তব্য দেখতে পাই সেখান থেকে ধারণা হতেই পারে। কারণ করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকেই বর্তমান ইউএনও মহোদয় যেভাবে কাজ করতে শুরু করেছেন। প্রতিটি ভালো কাজেই বাধা থাকে। যে কাজ করে না তাঁর কোনো ত্রুটি থাকে না। যে কাজ করে তাঁর ত্রুটি বের করার সুযোগ খুঁজে। সম্প্রতি ইউএনও মহোদয় একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন যে সোনারগাঁয়ে নদীবেষ্টিত নুনেরটেক যেটাকে মায়াদীব হিসেবেও চিনি। কিন্তু বালু সন্ত্রাসীদের কারণে দ্বীপটি বিলীন হওয়ার পর্যায়ে। কিন্তু সম্প্রতি দ্বীপটিকে নিয়ে ইউএনও কাজ শুরু করেছেন। বৃক্ষ রোপণ করেছেন। ২৬টি সংগঠন তাঁর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এখান থেকেই বিরোধ।’


বিভাগ : টক শো


নিউজ নারায়ণগঞ্জ এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আরো খবর
এই বিভাগের আরও