৫ মাসের প্রেগন্যান্ট হয়ে মামলার আসামী : দিপা (ভিডিও)
স্টাফ করেসপনডেন্ট || নিউজ নারায়ণগঞ্জ ১০:২১ পিএম, ১৩ আগস্ট ২০২০ বৃহস্পতিবার

কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকুর সহধর্মিনী দিপা হাসেম বলেন, ‘আমি ডিবি অফিসে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম যে আমার কাছে তো ফুটেজ আছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী তাঁকে (শকু) নিয়ে আসছে। কিন্তু এখন আপনারা বলছেন নিয়ে আসেন নাই। আপনারা জানেনও না সে কোথায় আছে। তাঁরা একবার নারায়ণগঞ্জ থানা, একবার সোনারগাঁ থানা, একবার সিদ্ধিরগঞ্জ থানা, এইভাবে রাত ৩টা পর্যন্ত তাঁরা আমাকে ঘুরালো। এরপর তাঁর (কাউন্সিলর শকুর) যে জনবল সবাই ডিবি অফিসে আসছে শুধু জানার জন্য যে হ্যাঁ ওকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এতটুকু জানার জন্য। তখন ওই জনগনের উপর তাঁরা লাঠিচার্জ করলো। উল্টা লাঠিচার্জের প্রেক্ষিতে পরের দিন আমার নামে মামলা করলো। এক নাম্বার আসামী করে যে আমি ডিবি অফিসে হামলা করেছি। অথচ আমি কিন্তু প্রেগন্যান্ট তখন ৫ মাসের।’
১২ আগস্ট বুধবার রাত ১০টায় নিউজ নারায়ণগঞ্জের লাইভ টকশো ‘করোনা হিরোদের অনুপ্রেরণার গল্পট’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন দিপা হাশেম। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের সহধর্মিনী আফরোজা খন্দকার লুনা। সঞ্চালনায় ছিলেন হাফসা আক্তার।
তিনি আরো বলেন, ‘আমি যখন ৮ মাস কি ৯ মাসের প্রেগন্যান্ট ছিলাম। তখনো আমাকে অনকল দেওয়া হয়নি যে আমি অনকলে হাজিরা দিব। আমাকে প্রতি মাসে হাজিরা দিয়ে যেতে হয়েছে। আমি অসুস্থ অবস্থায় হাজিরা দিয়ে এসেছি। মনে হয় ৮ থেকে ৯ মাস আগে সেই মামলা থেকে আমি খালাস পেয়েছি।’
দুঃসাহ সেই স্মৃতি মনে করে তিনি বলেন, ‘তখনো তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তখন তিনি বাসায় ছিল না। কারণ রাজনৈতিক মামলাগুলোর ওই সময়ের প্রেক্ষাপট এমন ছিল যে আমরা যে দলের রাজনীতি করি আমাদের হাজব্যান্ডদের বাসায় থাকার মত পরিস্থিতি ছিল না। নারায়ণগঞ্জের অবস্থা তখন অনেক বেশি ভয়াবহ ছিল। তাঁরা জানতো যে তাঁরা বাসায় নেই। তার পরেও তাঁরা বাসায় আসতো। আমাদেরকে ভয়ভীতি দেখাতে আমাদের সন্তানদেরকে ভয়ভীতি দেখাতো। মাঝে মাঝে বলতো তাঁকে না পাওয়া গেলে আমাদেরকে নিয়ে যাবে। অনেক ভাবেই হ্যারেজ করেছে আমাদেরকে। ওই দুঃসাহ স্মৃতি কখনই ভুলবার মতো না।’
তিনি আরো বলেন, ‘তারপর যখন তাঁকে গ্রেপ্তার করলো। আমরা সিলেট ছিলাম। আমরা সিলেট থেকে এসেছি। অথচ আমরা যখন সিলেট স্টে করছি সেই দিনের ঘটনায় তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে। আমার কাছে সমস্ত ডকুমেন্ট ছিল। তার পরেও বলেছে যে সে নাকি উপস্থিত ছিল ওই ঘটনায় নারায়ণগঞ্জে। তাঁরা আমার ডকুমেন্টকে প্রাধান্য দেয় নাই। আসলে তখনতো তাঁদের ইশারায় সব কিছু ছিল। তারপরেও তাঁকে গ্রেপ্তার করা হলো। তাঁকে সেলে নেওয়া হলো। সেখানে ৪ দিন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো। আমি যেন তাঁর জন্য কোনো কিছু করতে না পারি। কোর্ট থেকে শুরু করে বিচারিক কোনো কাজেই যেন আমি সাহায্য করতে না পারি সে জন্য আমাকেও সেই সময় মামলা দেওয়া হয়েছিল। আমি নিজেও পলাতক ছিলাম। আমি প্রেগন্যান্ট ছিলাম। ওই অবস্থায় আমাকে ওই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়েছে। আমার মনে হয় না আমি যতদিন বেঁচে থাকবো ততদিন ওই স্মৃতিগুলো ভুলতে পারব।
তিনি বলেন, ‘তাঁকে কাউন্সিলর অফিস থেকে উঠিয়ে নেওয়া হয়েছিল। সিসিটিভি ফুটেজ আছে যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাঁকে উঠিয়ে নিয়ে এসেছে। কিন্তু তাঁরা অস্বীকার করেছে। নারায়ণগঞ্জের কানো আইনশৃঙ্খলাবাহিনী তখন স্বীকার করে নাই যে তাঁকে নিয়ে আসছে। আমরা সমস্ত জায়গায় যোগাযোগ করেছি। তাঁদের একটাই কথা জানে না কে উঠিয়ে নিয়ে আসছে।’