পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রসঙ্গে পরামর্শ

স্টাফ করেসপনডেন্ট || নিউজ নারায়ণগঞ্জ ১০:০৮ পিএম, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ মঙ্গলবার

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রসঙ্গে পরামর্শ

‘আমি যখন লেখাপড়া করেছি যেমন এসএসসির কথা যদি বলি আমি কিন্তু মডেল টেস্ট দেইনি। এর মানে হচ্ছে আমার আশেপাশে এমন কেউ ছিল না যে আমাকে বলে দিবে যে মডেল টেস্ট দিতে হবে। তারপর ইন্টারমিডিয়েট দেওয়ার পর ভালো করে কোচিং করতে হবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়ার জন্য। এখন কিন্তু প্রেক্ষাপট ভিন্ন। অভিভাবকেরা অনেক সচেতন হয়েছেন। স্টুডেন্টদের সুযোগ সুবিধাও বেশি। কিন্তু অপরদিকে প্রতিযোগীতা অনেক বেড়েছে। যেমন এখন অনেক এপ্লিকেন্ট থাকে সেখান থেকে বাদ দিয়ে ১০ হাজার স্টুডেন্ট নেওয়া হয়। সেখান থেকে পরীক্ষার মাধ্যমে ১ হাজার নেওয়া হয়। ওই যে ১০ হাজার নেওয়া হয়। আমার মনে হয় সবাই বেস্ট। সবারই গোল্ডেন এ প্লাস থাকে। কিন্তু প্রতিযোগীতা এত যে যোগ্যতা থাকার পরেও পরীক্ষা কেমন হবে এর উপর নির্ভর করে। অর্থাৎ সামগ্রীক ভাবে খুব ভালো করে প্রস্তুতি নিতে হবে।’

২৮ সেপ্টেম্বর সোমবার রাত সাড়ে ৯ টায় নিউজ নারায়ণগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জস্থান ফেসবুক গ্রুপের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘রেইজ অব নারায়ণগঞ্জ’ বিষয় : ‘নারায়ণগঞ্জ ভাবনা’ অনুষ্ঠানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার জন্য প্রস্তুতি প্রসঙ্গে নারায়ণগঞ্জের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলছিলেন নারায়ণগঞ্জের সন্তান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর সহযোগী অধ্যাপক (কেমিকৌশল বিভাগ) ডা. ইকবাল হোসেন।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জের আরেক কৃতি সন্তান ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধ্যাপক (ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, রোবটিক্স ও মেকাট্রনিক্স) ডা. লাফিফা জামাল। সঞ্চালনায় ছিলেন অভিজিত সাহা।

ডা. ইকবাল হোসেন আরো বলেন, ‘এইচএসসির পর যে একটি সময় থাকে সেটাকে ভালোভাবে ব্যবহার করতে হবে। নির্ধারণ করতে হবে আসলে আমি কি বুয়েটে পড়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ব নাকি মেডিকেলে যাবো। এগুলো নির্ধারণ করে পরিকল্পনা করে প্রস্তুতি নিতে হবে। চেষ্টা থাকতে হবে। প্রতিটি পদক্ষেপকে কাজে লাগাতে হবে। আন্তরিকভাবে নিতে হবে এবং নিজের ফাউন্ডেশনকে পাকাপোক্ত করতে হবে। মুখস্তবিদ্যা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে টিকা যাবে না। যে প্রতিযোগীতা সেটা হচ্ছে মহা প্রতিযোগীতা। আমার মনে হয় সব থেকে বড় পরীক্ষা হচ্ছে ভর্তি পরীক্ষা। সেখানেই আমার ভাগ্য নির্ধারিত হবে অর্থাৎ আমি কোন দিকে যাব। এর জন্য সর্বোচ্চ যেভাবে প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব সেটা নিতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘সকল প্রস্তুতির পরেও একজন কোয়ালিফাইড স্টুডেন্ট কিন্ত বাদ পড়ে যায়। তার কাছে কিছু করার থাকে না। বুয়েটে সুযোগ না পেলেই যে তাঁর শিক্ষা জীবন শেষ ভবিষ্যৎ কর্মজীবন শেষ হয়ে যাবে বিষয়টি কিন্তু এরকম না। আরো বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। সেখানে পড়ার সুযোগ রয়েছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। পরিস্থিতি অনেক পাল্টেছে। সবাই শিক্ষাব্যবস্থাকে ভালো করার চেষ্টা করছে।’

নারায়ণগঞ্জের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. লাফিফা জামাল বলেন, ‘আমরা সব সময় বলি যে আমার ছেলে বা আমার মেয়ে পড়াশোনায় ভালো করবে, ভালো শিক্ষার্থী হবে, ভবিষ্যতে ভালো করবে। আমরা কত জন বলি যে আমার ছেলে বা মেয়ে ভালো মানুষ হবে। আমার সব চেয়ে বড় মেসেজ থাকবে এটা যে ভালো মানুষ হওয়ার কোনো বিকল্প কিন্তু নাই। আমি যদি ভালো মানুষ হই স্বাভাবিক ভাবেই আমার আশপাশ ভালো থাকবে এবং আমি কিন্তু আমার জীবনে সফল হতে পারব। সব সময় বাহ্যিক সফলতা দেখে সেই সফলতাকে আমরা নিরূপন করতে পারি না।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা প্রায়ই পত্রপত্রিকায় দেখি যে আমরা যাদেরকে অনেক সফল মনে করতাম তাঁরা নীতি নৈতিকতা থেকে অনেকটা দূরে সরে যায়। কাজেই আমি শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদেরকে বলব শিক্ষার্থীদেরকে ভালো মানুষ হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করি। তখন দেখব খুব স্বাভাবিক ভাবেই আমার আশপাশ সুন্দর হবে। এবং আমার সফলতা ঠিক চলে আসবে। শুধুমাত্র অর্থনৈতিক সলতা বা পরীক্ষায় ভালো রেজাল্টের মাধ্যমেই সফলতা পেতে পারি না। ভালো মানুষ হওয়ার মধ্য দিয়েই সফলতা পেতে পারি।’


বিভাগ : টক শো


নিউজ নারায়ণগঞ্জ এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

আরো খবর
এই বিভাগের আরও