আইভীকে হেনস্থার চেষ্টা : কাদির
স্টাফ করেসপনডেন্ট || নিউজ নারায়ণগঞ্জ ০৯:৫৪ পিএম, ৮ ডিসেম্বর ২০২০ মঙ্গলবার

নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আব্দুল কাদির বলেন, ১৯৮৪ সালে মেয়র আইভীর বাবা আলী আহাম্মদ চুনকার নির্বাচনের সময়েও এই ধরনের একটি অভিযোগ তোলা হয়েছিল। সেসময় চুনকা প্রকাশ্যে বক্তব্য দিয়ে বলেছেন, আমি জিউস পুকুর কিনি নাই। আমি এর সাথে সম্পৃক্ত না। আমার নাম শুধু শুধু বলা হয়। এমনকি কেউ যদি প্রমাণ দিতে পারে আমি জিউস পুকুর কিনেছি; তাহলে আমি রাজনীতি করবোনা। সেসময় যারা এই ইস্যুটি উত্থাপিত করেছিল তারা চুপসে যায়। নির্বাচন আসলেই এই ধরনে অভিযোগ তোলা হয়।
তিনি আরো বলেন, আসলে জিউস পুকুরের মালিকানা ছিল। মালিকানা থেকে এটা ক্রয় করা হয়েছে। শুধু জিউস পুকুরই নয় আশে পাশের অনেক জায়গা বিক্রি করেছে যে জিউস পুকুর বিক্রি করেছে। ৪০, ৪৫, ৫০ বা তারও বেশি বছর ধরে আশে পাশের অনেকে দখল করে বসবাস করছে। এগুলো কেউ বলেনা। নির্বাচন ইস্যু আসলেই নানা অভিযোগ তোলা হয়। আইভী যদি আজকে নির্বাচন না করতো তাহলে এ ধরনের ইস্যু আসতোনা। মেয়র আইভীকে ঘায়েল করার জন্য নির্বাচনের আগে এসব প্রচার হয়। মেয়র আইভীও তার বক্তব্য স্পষ্ট করেছে যে, আমি এ সম্পর্কে জানিনা। আমার যদি জায়গা থাকে আপনারা দেখেন আমি দিয়ে দিব।
কাদির বলেন, আওয়ামীলীগের মধ্যে কিছু আছে যারা সব সময় মেয়রের বিরোধীতা করে বা মেয়রের আশেপাশে যারা থাকে তাদের হেনস্থা করার জন্য এরকম ইস্যুগুলো তোলে। নারায়ণগঞ্জের মানুষকে উত্তপ্ত করার জন্য মেয়রকে হেস্তনেস্থ করার জন্য তারা যে ভাষা ব্যবহার করছে তা রাজনৈতিক ভাষা নয়। এটা একটা পাতানো খেলা। আইভীকে যদি হেস্তনেস্ত করা যায়। তাদের বুঝতে অনেক সময় লাগছে কিন্তু তারা বুঝে যে মানুষটা তাদের নেতা যে নির্বাচন করে এতো প্রোপাগান্ডা করে আইভীর বিরুদ্ধে। তারপরও তিনি নির্বাচনে গিয়ে বিপুল ভোটে পরাজিত হয়েছেন। ওই দিন ভোটের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছে যে তারা উন্নয়ন করতে চাচ্ছেনা। আর এবার আইভী যাতে উন্নয়ন করতে না পারে সেজন্য তারা আইভীর স্থান থেকে দূরে সরিয়ে দিতে এই ইস্যু তুলেছে। কোর্টের রায় তাদের বিপক্ষে গিয়েছে সেই রায়ও তারা মানেনা। রাজনীতিতে আইভীকে ক্লিয়ার করতে পারলে অনেকে মেয়রের স্থানটা পূরণ করতে চেষ্টা করছে।
৬ ডিসেম্বর নিউজ নারায়ণগঞ্জের লাইভ টকশো ‘নারায়ণগঞ্জ কখন’ অনুষ্ঠানে অতিথিদের বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আরিফ হোসাইন কনক এর সঞ্চালনায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সহ সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সহ সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, হিন্দুদের সম্পত্তি সবচেয়ে বেশি দখল করেছে আওয়ামীলীগের লোকেরা। শতকরা ৯৫ ভাগ সম্পত্তি আওয়ামীলীগের লোকেরা দখল করেছে। জিউস পুকুর দেবোত্তর সম্পত্তি। ১৯৭৯ সালে লক্ষ্মীনারায়ণের দেবোত্তর সম্পত্তি নিয়ে রাজেন্দ্র প্রসাধ ঝাঁ মামলা করেছিল। মামলা করার পরে ওই লোককে আর দেখা যায়নি। ওই লোকের ভাগ্যে কি হয়েছে সেটা আমরা জানিনা।
সাখাওয়াত আরো বলেন, নারায়ণগঞ্জটাকে একটা ডিম পাড়া হাসের সাথে তুলনা করা যায়। আওয়ামীলীগ বলেন আর সরকার বলেন নারায়ণগঞ্জের উভয় পক্ষকে বেহাত করতে চায়না। অন্য সম্পত্তিতো দখল হয়-ই হিন্দুদের সম্পত্তিও দখল করছে তারা।
মেয়র আইভীর ব্যাপারে বলেন, মেয়র আইভীর বিরুদ্ধে আজকে যে অভিযোগ সেটা সত্য প্রমাণিত না হোক। কিন্তু মেয়র আইভী বা তার পরিবার স্বজনদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগে উঠেছে তা মিথ্যা প্রমাণ করার দায়িত্ব তার। সেটা সে যতদিন প্রমাণ করতে না পারবে নারায়ণগঞ্জের মানুষ এটা সত্য হিসেবে ধরে নিবে।
দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের ব্যাপারে বলেন, আমি যদি দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে থাকি আমার বিরুদ্ধে তো কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। আর দলের মধ্যে পক্ষ বিপক্ষ থাকে। এমন অনেকে আছে যারা নানা অভিযোগ থাকে। তারা অনেক সময় কেন্দ্রে অভিযোগ করে থাকে। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে কেন্দ্র তেমন কোন প্রমাণ পায়নি শৃঙ্খলা ভঙ্গের যেকারণে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।