নৌকা ডুবানো বিএনপি ঘেঁষা
স্পেশাল করেসপনডেন্ট || নিউজ নারায়ণগঞ্জ ১০:৫৭ পিএম, ৩০ আগস্ট ২০২১ সোমবার

নারায়ণগঞ্জ সদর থানা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও গোগনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিমউদ্দিন তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ফজর আলী সম্পর্কে বিষ্ফোরক মন্তব্য করেছেন। ফজর আলীকে বিএনপি ঘেষা ও নৌকা ডুবানো নেতা বলেও মন্তব্য করেছেন।
২৬ আগস্ট বৃহস্পতিবার রাতে নিউজ নারায়ণগঞ্জের লাইভ টকশো নারায়ণগঞ্জ কথন অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তব্যে সদর থানা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও গোগনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিমউদ্দিন এ কথা বলেন। এসময় অনুষ্ঠানে সঞ্চালনায় ছিলেন আরিফ হোসাইন কনক।
রাজনীতিতে সিএস পর্চা নাই এমন প্রশ্নে জবাবে জসিমউদ্দিন বলেন, ‘আমার বাবা ১৯৬৪ সালে চেয়ারম্যান হয়। তখন আমার বাবা আওয়ামীলীগের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৭০ সালে বঙ্গবন্ধুর নামে সৈয়দপুরে স্কুল তৈরি করেছেন। এটা বঙ্গবন্ধুর নামে প্রতিষ্ঠিত প্রথম স্কুল সৈয়দপুর বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। পরবর্তীতে ১৯৭২ সালে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হন। ওই বছরই গোগনগর ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে। ৭৭ সালে ফের নির্বাচিত হয়েছেন। আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। সে ধারাবাহিকতায় আমিও আওয়ামীলীগ করি আমার পরিবার আওয়ামীলীগ করে। এর পাশাপাশি আমার ছোট ভাই জেলা শ্রমিকলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বে রয়েছে। আমাদের পুরো পরিবার আওয়ামীলীগ পরিবার।
ফজর আলীর এক মন্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, আমি সহ তিনজন মিলে গোগনগরে আওয়ামীলীগে কমিটি করি, এ কথা যে বা যারা বলেছে তারা গঠনতন্ত্র বুঝেনা জানেনা। তাদের এ ব্যাপারে ধারণা নেই।
ফজর আলীর সহ সভাপতি পদ নিয়ে বলেন, ‘গঠনতান্ত্রিকভাবে ফজর আলী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি পদে আসতে পারেনা। সে সবেমাত্র আওয়ামীলীগের নতুন ফরম সংগ্রহ করেছে। সে এর আগে আওয়ামীলীগের কোন পদ পদবিতে ছিলনা। আরেকটা লোক আছে মোসলেউদ্দিন মন্ডল, সে গত নির্বাচনে বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিল। তার নামও ছিল। এছাড়া আপন দুই ভাই ও বাবা ছেলে এক কমিটি এটা হতে পারেনা। কোন হাইব্রিড কাউয়া দলে ঠাই পাবেনা।
ফজর আলী হাইব্রিড প্রসঙ্গে বলেন, ফজর আলীর পরিবার ছিল বিএনপি সমর্থিত ও ঘেঁষা। ওরা কখনো আওয়ামীলীগ করে নাই। আওয়ামীলীগের সাথে কখনো সম্পৃক্ত ছিলনা। বিশেষ করে তার ভাই (নওশেদ চেয়ারম্যান) বিগত নির্বাচনে নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে কাজ করে নৌকা ডুবিয়েছে। আজকে ফজর আলী নৌকা চাচ্ছে, অথচ বিগত নির্বাচনে নৌকাকে ডুবানোর জন্য সে ও তার লোকজন যতরকম প্রক্রিয়া আছে সব করেছে। ২০১৬ সালের ওই নির্বাচনে নৌকার বিপক্ষে কাজ করে নৌকা ডুবিয়েছে।
জেলা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী বাদলের হাইব্রিড বক্তব্য প্রসঙ্গে বলেন, ‘তৃণমূলে হাইব্রিড কাউয়া নিয়ে অসন্তোষ আছে। ওনারা জেলার নেতা। তারা কোন ধরনের ভুল করে থাকলে এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় নেতারা দেখবেন।
সদর থানা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী আল মামুনের বক্তব্যের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় কথা। একজন সাধারণ সম্পাদক এ ধরণের কথা বলতে পারেনা। নৌকার বিরুদ্ধে কখনো আওয়ামীলীগ নেতা অবস্থান নিতে পারে এ কথা বলতে পারেনা। এ ব্যাপারে দলীয় হাই কমান্ডের কাছে আমরা জানাবো। সে নৌকাকে অবহেলা করে বক্তব্য দিতে পারেনা। এটা সঠিক হয়নি। এই বক্তব্যের নিন্দা জানাই।
ফজর আলীকে দলে প্রবেশ করাতে আল মামুন এমপি শামীম ওসমানের নাম ব্যবহার করেছে এমন বক্তব্যের রেশ ধরে তিনি বলেন, ‘মূল কারণ হচ্ছে টাকা। কিছু অসাধু নেতা আছে তারা কালো টাকার লোভে পড়ে এই বিভ্রান্ত সৃষ্টি করছে। প্রকৃত বিষয় হল এমপি সেলিম ওসমান ও এমপি শামীম ওসমান আমাদের সুশৃঙ্খলভাবে নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। এখানে কোন বিশৃঙ্খলা নেই। তবে কেউ কেউ কালো টাকার হাতছানিতে লম্ফ ঝম্ফ করছে। ব্যক্তিগত সুবিধা হাসিলের জন্য তারা এ কাজ করছে।’
তিনি আরো বলেন, গত নির্বাচনে শামীম ওসমানের মাধ্যমে আমি নৌকা পেয়েছি। এবারো ইনশাআল্লাহ আবার নৌকা পাবো। এছাড়াও এবার এমপি সেলিম ওসামান আমাকে সমর্থন দিয়েছেন। আমরা ওসমান পরিবারের রাজনীতি করে এসেছি। আমাদের মধ্যে কোন বিভাজন নেই। তাদের দিক নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা চলবো।
নৌকা প্রতিক প্রাপ্তির দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, আমি আওয়ামীলীগ করি আমার রক্তে আওয়ামীলীগ। সেক্ষেত্রে আমার দৃঢ় বিশ্বাস আমি নৌকা নিয়ে নির্বাচন করবো। আমি সহ আমার পুরো পরিবার আওয়ামীলীগ করে আসছি। তাই নেত্রী আমাকে নৌকা দিবেন এবং তৃণমূল থেকেও নৌকার সমর্থন রয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদি কোন কারণে নৌকা না পান তবে এমপি সেলিম ওসমান ও এমপি শামীম ওসমান যে নির্দেশনা দিবেন সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামীলীগ ঐক্যবদ্ধ আছে। মোস্তাকের প্রেতাত্মাদের প্রতিহত করা হবে। হাইব্রিড অনুপ্রবেশকারীদের প্রতিহত করা হবে। ইতোমধ্যে দুই ইউনিয়নের নেতাকর্মী জেলা আওয়ামীলীগ সহ কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম সাহেবের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। কোন হাইব্রিড আওয়ামীলীগে ফাটল ধরাতে পারবেনা।